ইটের পুল বিদ্যুৎকেন্দ্র অপারেশন
ইটের পুল বিদ্যুৎকেন্দ্র অপারেশন (মাদারীপুর সদর) পরিচালিত হয় ১০ই জুন। এতে ইটেরপুল ওয়াপদা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বিধ্বস্ত হয়।
মাদারীপুরস্থ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প এ আর হাওলাদার জুটমিলসের অতি কাছে ইটের পুল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবস্থিত ছিল। ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে খলিলুর রহমান খানের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধাদের ৫-৬ জনের একটি দল এ অপারেশনে অংশ নেয়। খলিলুর রহমান খান সহযােদ্ধাদের নিয়ে সন্ধ্যার পরে কলাগাছিয়ার ক্যাম্প থেকে নৌকাযােগে অপারেশনে বের হন। তাঁরা নৌকায় শশিকরে গিয়ে নেমে তারপর খালপার ধরে হেঁটে লক্ষ্যস্থলের দিকে অগ্রসর হন।
মুক্তিযােদ্ধারা বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্মােক গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। গ্রেনেড বিস্ফোরণের কারণে আগুন ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ সারা শহর অন্ধকারে ডুবে গেলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাওয়ার স্টেশনটি পুড়ে সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়। শত্রুপক্ষ কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই মুক্তিযােদ্ধারা অপারেশন সফল করে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসেন। এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল শহরবাসীকে মুক্তিযােদ্ধাদের উপস্থিতি জানান দেয়া। অপারেশন সফল হওয়ায় লক্ষ্য অর্জিত হয়। মুক্তিযােদ্ধারা সক্রিয় এটা বুঝতে পেরে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষের মনে সাহস ও আশাবাদ জন্মায়। পক্ষান্তরে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের কাছে এ বার্তা পৌঁছে যে, সামনের দিনগুলােতে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মােকাবেলা করতে হবে। এ অপারেশন থেকে ফেরার পথে মুক্তিযােদ্ধাদের দ্বারা শান্তি কমিটির সদস্য রহম দর্জি আক্রান্ত ও নিহত হয়। এতে মাদারীপুরের শান্তি কমিটির সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড