আহম্মদনগর গণকবর
আহম্মদনগর গণকবর (শাহরাস্তি, চাঁদপুর) চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় অবস্থিত। এখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনাদের দ্বারা নিহত ২৫ জন গ্রামবাসীকে গণকবর দেয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে পাকিস্তানি হানাদাররা চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার প্রসন্নপুর গ্রামে যে গণহত্যা চালিয়েছিল। (৮ই ডিসেম্বর), ঠিক একই সময়ে তার পাশের আহম্মদনগর (পূর্বের খিলাবাজার ও কাইথড়া) গ্রামেও গণহত্যা চালায়। এ গণহত্যায় শহীদদের আহম্মদনগর পশ্চিম ভূঁইয়া বাড়ি কবরস্থানে গণকবর দেয়া হয়। এখানে সমাহিতরা হলেনটুকু গাজী (পিতা হামিদ আলী), হাছান আহমেদ, আবদুস সাত্তার, রমজান আলী (এ ৩ জনের পিতা আবদুল আজিজ, কাইথড়া), ওসমান আলী (পিতা ছিয়া গাজী), মােহাম্মদ আলী (পিতা ওসমান আলী), খুরশিদা বেগম, কুলছুম বেগম, রাবিয়া বেগম (এ ৩ জনের পিতা মাে. আলী, কাইথড়া), মােশারেফ হােসেন, আছমাতের নেছা (এ ২ জনের পিতা আয়ুব আলী, কাইথড়া), আবুতাহের, হাছান মিয়া, রৌশনারা বেগম (এ ৩ জনের পিতা রমজান আলী, কাইথড়া), রঞ্জন বানু, শাফিয়া বেগম (এ ২ জনের পিতা জয়নাল আবেদিন, কাইথড়া), নুরুল ইসলাম, রাবিয়া বেগম (এ ২ জনের পিতা আলী আকবর, কাইথড়া), জাকির হােসেন (পিতা আবদুল মালেক, কাইথড়া), আবদুল মজিদ (পিতা ইয়াছিন), কালা মিয়া (পিতা আবদুল মজিদ, কাইথড়া), রফিকুল ইসলাম, আবুল বাশার, ফাতেমা ও আছিয়া বেগম (এরা সকলে ছিলেন কাইথড়ার)। উল্লেখ্য যে, ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ পাড় মুক্তিযােদ্ধাদের জন্য যুদ্ধকালীন সময়ে একটি অভয়াশ্রম ছিল। সেখানে রাস্তাঘাট ভালাে না থাকার কারণে পাকসেনাদের পায়ে হেঁটে যুদ্ধ পরিচালনা করতে হতাে। পাকিস্তানি হানাদারদের যুদ্ধের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আহম্মদনগরে এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযােগের মতাে হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটায়। এ কবরস্থানটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। এতে কোনাে সীমানা প্রাচীর ছিল না। অল্প কিছুদিন আগে চাঁদপুর জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে এ গণকবরের চর্তুদিকে বেষ্টনী তৈরি করা হয়। তবে কোনাে স্মৃতিস্তম্ভ বা তােরণ নাই। [মাে. মিজানুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড