You dont have javascript enabled! Please enable it!

আশুগঞ্জ যুদ্ধ

আশুগঞ্জ যুদ্ধ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ৯ই ডিসেম্বর। এদিন পাকসেনারা ডিনামাইটের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মেঘনার রেলওয়ের পূর্ব পাশের স্প্যানটি ধ্বংস করে দেয়। এরপর তারা তাদের অবস্থান মজবুত করার কৌশল অবলম্বন করে। ভারতীয় মিত্রবাহিনী- ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিয়ে দ্রুত সামনের দিকে এগােতে থাকে। রাজপুত রেজিমেন্টের সেনারা ট্যাঙ্কসহ ওয়াপদার বাউন্ডারির দুশ গজের মধ্যে খালি ময়দানে পৌছামাত্র একযােগে পাকবাহিনী ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী কামান নিয়ে ভারতীয় বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঙ্কার থেকে অনবরত মেশিনগানের গুলিতে শতাধিক ভাতীয় সৈন্য শহীদ হন ও ১২ জন পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। এছাড়া তিনটি ভারতীয় ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয়ে যায়। পাকসেনারা আটককৃত ভারতীয় জওয়ানদের পুবালী ব্যাংকের সামনের রাস্তায় শুইয়ে তাদের ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। সাময়িক সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে পাকনারা ইয়া আলী’ ধ্বনি দিয়ে পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে দুর্গাপুর পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীকে হটিয়ে নিয়ে যায়। পরে ওয়ারলেস পেয়ে আজবপুর থেকে মিত্রবাহিনীর একদল এবং তালশহর থেকে ১৮ রাজপুত রেজিমেন্ট এসে আক্রমণ চালিয়ে পাকবাহিনীকে কোণঠাসা করে। এতে বহু পাকসেনা নিহত হয়। মাত্র ৫০ জনের মতাে প্রাণ বাঁচিয়ে ওয়াপদায় ফিরে আসতে সক্ষম হয়। ভারতীয় বাহিনীর বিপুল ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়ার পর দুই জোড়া ভারতীয় যুদ্ধ বিমান এসে আশুগঞ্জ ও ভৈরবে পাকবাহিনীর ওপর বিরামহীন বােমা বর্ষণ করতে থাকে। দুর্গাপুর, সােহাগপুর ও আশুগঞ্জে অগণিত ভারতীয় ও পাকিস্তানি সৈন্যের লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে। যুদ্ধ বিমানের কভারেজে কয়েকটি ভারতীয় হেলিকপ্টার এসে ভারতীয় সৈন্যদের লাশ নিয়ে যায়। [আমির হােসেন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!