বীর প্রতীক আসাদ আলী
আসাদ আলী, বীর প্রতীক (মৃত্যু ১৯৮৯) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি গােপালগঞ্জ জেলার সদর থানার ঘােষেরচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কালু মােল্লা এবং মাতার নাম ছুটু বিবি। তিনি গােপালগঞ্জ মডেল স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং একই এলাকার বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে আইএ পাস করেন।
আসাদ আলী ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল)-এ চাকরির মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ইপিআর-এর হাবিলদার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে বাঙালিদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করলে আসাদ আলী পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যােগদান করেন। তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে কুষ্টিয়া শহর, বেনাপােল, যাদবপুর, গরিবপুর, ছুটিপুর, বয়রা প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশ নেন। আসাদ আলী নভেম্বর মাসে চৌগাছা থানার হিজলী বিওপি-র কাছে লে. অলিক কুমার গুপ্তের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালিয়ে ১৮-১৯ জন শত্রুসৈন্যকে হত্যা করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিপুণ যুদ্ধ কৌশল প্রয়ােগ এবং বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আসাদ আলীকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪৫৭, খেতাবের সনদ নম্বর ২০৭)।
মুক্তিযুদ্ধের পর আসাদ আলী বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এ যােগদান করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি বিডিআর থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি অবসর জীবনে সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তিনি ৪ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম হাসিনা বেগম (প্রয়াত)। আসাদ আলী ১৯৮৯ সালের ১লা জানুয়ারি মধুমতী নদীতে এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড