You dont have javascript enabled! Please enable it!

আলােকডিহি জে বি স্কুল গণহত্যা

আলােকডিহি জে বি স্কুল গণহত্যা (চিরিরবন্দর, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় ৭ই অক্টোবর। এতে প্রায় ২০০ জন সাধারণ মানুষ হত্যার শিকার হন।
দিনাজপুরের দশমাইল ও নীলফামারীর সৈয়দপুর সংযােগ সড়কের রানীরবন্দরের কাছে ইছামতি নদীর তীরে আলােকডিহি জে বি স্কুল অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প ছিল। তাদের হাতে এ স্কুলটি বধ্যভূমি, বন্দিশিবির ও নির্যাতনকেন্দ্রে পরিণত হয়। রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা প্রায়ই বাঙালিদের ধরে এনে এখানে বন্দি করে রাখত। মুক্তিযােদ্ধাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য তাদের ওপর টর্চার করত এবং টর্চার করতে-করতে হত্যা করা হতাে। এখানে অল্প বয়সী মেয়েদেরও ধরে আনা হতাে। তাদের ওপর চালানাে হতাে পাশবিক নির্যাতন। কয়েকদিন ধরে নির্যাতন চালানাের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হতাে।
এখানে সবচেয়ে বড় গণহত্যাটি সংঘটিত হয় ৭ই অক্টোবর। এদিন দূর-দূরান্ত থেকে প্রায় ২০০ জন লােককে ধরে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার ও গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে কামারপাড়ার যারা এখানে নিহত হন, তাদের কয়েকজনের পরিচয় ছাড়া অন্যদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। কামারপাড়ার নিহত কয়েকজন হলেন- ধনপতি কর্মকার (পিতা সর্বেশ্বর কর্মকার), রমানাথ কর্মকার (পিতা মুকুন্দ কর্মকার), নগেন্দ্র কর্মকার (পিতা মুকুন্দ কর্মকার), ধনঞ্জয়। কর্মকার (পিতা অধর কর্মকার), করুণাকান্ত মােহন্ত (পিতা শশীকান্ত মােহন্ত), বিনােদ কর্মকার (পিতা শ্রীকান্ত কর্মকার), কামিনী কর্মকার (পিতা শ্রীকান্ত কর্মকার), রবীন্দ্রনাথ কর্মকার (পিতা যােগেন্দ্র কর্মকার) ও নিরাশা চন্দ্র কর্মকার (পিতা শিবচরণ কর্মকার)। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ডা. সিরাজুল ইসলাম (আলােকডিহি) ও শওকত আলী (নওখৈর)-সহ আরাে অনেককে এখানে হত্যা করা হয়। গণহত্যার পাশাপাশি ট্রাকে করে অনেকের লাশ এখানে এনে ফেলা হয়েছে। তাই এটি একটি গণকবর হিসেবেও পরিচিত। শহীদদের স্মরণে জে বি স্কুল প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!