You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধকালে গঠিত বেসামরিক প্রশাসন জোনাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম - সংগ্রামের নোটবুক

আশরাফুল ইসলাম

আশরাফুল ইসলাম (১৯২৩-১৯৯১) রাজশাহী অঞ্চলের বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধকালে গঠিত বেসামরিক প্রশাসন জোনাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তিনি ১৯২৩ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি নাটোর মহকুমা (বর্তমানে জেলা)-র সিংড়া থানার তাজপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ঘাসিউল্লা ও মাতার নাম আজজান বিবি। তিনি ১৯৪০ সালে কলম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। ছাত্র অবস্থায় তিনি পিতৃহারা হন। ১৯৪৮-১৯৫০ সময়ে তিনি ইউনিয়ন বাের্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ছিলেন সিংড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি নাটোর মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (১৯৫০-১৯৫৪), সাধারণ সম্পাদক (১৯৫৪-১৯৫৬) ও সভাপতি (১৯৫৬-১৯৭৪) ছিলেন। পাশাপাশি ১৯৬৬-১৯৭২ সময়ে তিনি বৃহত্তর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আইয়ুববিরােধী আন্দোলনে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেসামরিক প্রশাসন গড়ে তােলার লক্ষ্যে যে ১১টি জোনাল কাউন্সিল গঠন করা হয়, তার মধ্যে তিনি রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ নিয়ে গঠিত প্রশাসনিক জোন (পশ্চিমাঞ্চল ২)-এর চেয়ারম্যান ছিলেন। শরণার্থী সাংস্কৃতিক গােষ্ঠী পশ্চিমাঞ্চল-২ শাখার তিনি উপদেষ্টা ছিলেন।
স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আশরাফুল ইসলাম বৃহত্তর রাজশাহী জেলা রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর প্রস্তাবে জাতীয় সংসদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ছবি সংস্থাপিত হয়। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ নামে একটি জাতীয় দল গঠন করা হলে তিনি তার নাটোর জেলা শাখার সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই বছর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি দীর্ঘ ৩ বছর ৩ মাস কারাভােগ করেন। চলন বিল প্রকল্প প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি নিজ এলাকায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯১ সালের ৮ই মার্চ আশরাফুল ইসলামের জীবনাসান ঘটে। তাঁর স্ত্রীর নাম মােছা. আমিনা বেগম। এ দম্পতি ৭ পুত্র ও ৫ কন্যা সন্তানের জনক-জননী। [হারুন-অর-রশিদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড