You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক আলী আকবর - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক আলী আকবর

আলী আকবর, বীর প্রতীক (১৯৪৬-১৯৭১) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৪৬ সালে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার দক্ষিণ ফালগুনকড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আলী এবং মাতার নাম আমেনা খাতুন। তিনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।
আলী আকবর কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকার ওয়াপদায় চাকরির মাধ্যমে। এর আগে তিনি মুজাহিদ বাহিনীর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ ঢাকায় গণহত্যা শুরু করলে আলী আকবর মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি চৌদ্দগ্রামে গিয়ে মুজাহিদ বাহিনীর প্রশিক্ষণ নেয়া অন্য তরুণদের সংগঠিত করার কাজে সম্পৃক্ত হন। চৌদ্দগ্রামে পাকবাহিনীকে প্রতিরােধ করার জন্য তিনি স্থানীয় ছাত্র-তরুণদের সঙ্গে একাধিক স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেড গড়ে তােলেন। পরে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য ভারতে যান।
আলী আকবর যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে গঠিত ২ নম্বর সেক্টরে যুক্ত হন। তিনি নির্ভরপুর সাব-সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন। তাঁর কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন আবদুল কাদির। তিনি বিভিন্ন যুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেন।
কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে চট্টগ্রাম ও নােয়াখালীর সঙ্গে যােগাযােগ রক্ষা ও রসদ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রে চৌদ্দগ্রামের অবস্থানগত গুরুত্ব এবং ভারতের ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী হওয়ায় পাকবাহিনী এ স্থানের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে খুবই তৎপর ছিল। থানায় তারা অনেক ক্যাম্প স্থাপন করে এবং প্রতিরােধ সৃষ্টিকারী মুক্তিযােদ্ধাদের ওপর বিভিন্ন স্থানে মরণপণ আক্রমণ রচনার চেষ্টা করে। এ থানার নয়াবাজারে পাকবাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের ওপর ২৯শে এপ্রিল এরকম এক আক্রমণ পরিচালনা করে। মুক্তিযােদ্ধারা পাকসেনাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করলে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করার সময় আলী আকবর শত্রুদের গুলিতে শহীদ হন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আলী আকবরকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয় (গেজেট নম্বর ৪১৫, খেতাবের সনদ নম্বর ১৬৫)। তিনি ব্যক্তি জীবনে ২ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম রােকেয়া বেগম। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড