You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.30 | আলীনগর পাকঘাঁটি আক্রমণ (গােমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

আলীনগর পাকঘাঁটি আক্রমণ

আলীনগর পাকঘাঁটি আক্রমণ (গােমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) পরিচালিত হয় ৩০শে সেপ্টেম্বর ও ৭ই নভেম্বর। প্রথমবার আক্রমণে ১৬ জন পাকসেনা নিহত ও ৮ জন আহত হয়। অপরপক্ষে একজন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন। দ্বিতীয় আক্রমণে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং অন্যরা পালিয়ে যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গােমস্তাপুর উপজেলার আলীনগরে পাকবাহিনীর একটি শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ ঘাঁটি একাধিকবার মুক্তিযােদ্ধাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। প্রথম আক্রমণ হয় ৩০শে সেপ্টেম্বর রাতে। মুক্তিবাহিনীর ৫০ জন সদস্যের একটি দল এ আক্রমণে অংশ নেয়। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর দলের নেতৃত্ব দেন। রাত প্রায় একটার দিকে মুক্তিযােদ্ধারা আক্রমণ করলে পাকবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে। দুপক্ষের মধ্যে তিন ঘণ্টা ধরে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলে। এ-যুদ্ধে ১৬ জন পাকসেনা নিহত এবং ৮ জন আহত হয়। মুক্তিযােদ্ধা জিন্নাত হােসেন হানাদারদের গুলিতে শাহাদত বরণ করলে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় পাল্টা আক্রমণ করে সমুচিত জবাব দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভােলাহাট সাব-সেক্টরের পার্শ্ববর্তী মহানন্দা নদীর তীরে শিবরামপুর থেকে রহনপুর হয়ে বিশ্বনাথপুর পর্যন্ত পাকসেনাদের কংক্রিট বাংকার-সহ সুদৃঢ় প্রতিরক্ষা অবস্থান ছিল। গােমস্তাপুর থানার আলীনগরের মতাে মকরমপুরেও পাকহানাদারদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। ৭ই নভেম্বর লে. রফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা মকরমপুরআলীনগরস্থ পাকঘাঁটিতে অতর্কিতে আক্রমণ করেন। আক্রমণে পাকিস্তানি সৈন্যরা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এ আক্রমণে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। অন্যরা মহানন্দা নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। এটি ছিল এক দুঃসাহসী অভিযান। এ আক্রমণে পাকসেনারা সম্পূর্ণভাবে পরাজিত ও বিপর্যস্ত হয়। মকরমপুর-আলীনগর পাকঘাঁটিতে মুক্তিযােদ্ধাদের সফল আক্রমণ এবং পাকিস্তানি সেনাদের পালিয়ে যাওয়া। মুক্তিযােদ্ধাদের ও এলাকার সাধারণ মানুষকে ভীষণভাবে উজ্জীবিত করে। [মাযহারুল ইসলাম তরু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড