আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস সংলগ্ন বধ্যভূমি ও গণকবর
আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস সংলগ্ন বধ্যভূমি ও গণকবর (ঈশ্বরদী, পাবনা) পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে প্রায় ২০০ নিরীহ মানুষকে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়।
ঈশ্বরদী শহরে পাকবাহিনীর অনেকগুলাে ক্যাম্পের মধ্যে একটি ছিল সুগার কেইন রিচার্স ইন্সটিটিউট (বর্তমান সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সটিটিউট)-এর পশ্চিমে আই কে রােডের পাশে আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস। এর পেছন দিকে ছিল রিফিউজি ক্যাম্পের জন্য নির্ধারিত জমি। ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় পরিত্যক্ত জমিটি কাশবন ও আগাছায় পূর্ণ জঙ্গলে পরিণত হয়। স্থানীয় অধিবাসীরা একে বলত কাশবন। এ নির্জন স্থানটিকে পাকবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার ও অবাঙালিরা বধ্যভূমি হিসেবে ব্যবহার করে। দিনের পর দিন আশপাশের নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে নিষ্ঠুর নির্যাতনের পর এখানে হত্যা করা হয়। এছাড়া সুগার কেইন গবেষণা ইন্সটিটিউট, কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ও তুত ফার্ম-এর কর্মচারী এবং আলহাজ্ব মিলস কলােনি ও স্কুলের কর্মচারীদের এ বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ বধ্যভূমিতে হত্যাকৃত শহীদদের সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। অথচ এখন পর্যন্ত এ বধ্যভূমি ও গণকবরটি সংরক্ষণের কোনাে ব্যবস্থা করা হয়নি। বর্তমানে এখানে জনবসতি গড়ে উঠছে।
১১ই এপ্রিল পাকবাহিনী ঈশ্বরদীতে প্রবেশ করার পর থেকে ১৬ই ডিসেম্বরের পূর্ব পর্যন্ত এ বধ্যভূমিতে হত্যাকাণ্ড চলেছে। নিহতদের মধ্যে মাত্র দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন রিয়াজ ও জিন্না। বাকিদের নাম জানতে না পারার কারণ তাদের অধিকাংশই ছিলেন চাকরিসূত্রে আসা অন্যান্য অঞ্চলের লােক। [আবুল কালাম আজাদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড