আলাদিপুর গণহত্যা
আলাদিপুর গণহত্যা (রাজবাড়ী সদর) সংঘটিত হয় ১১ই মে। এতে ৬ জন নিরীহ মানুষ শহীদ ও অনেকে আহত হন। রাজবাড়ী সদর উপজেলার অনেকে মুক্তিযুদ্ধবিরােধী। রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিল। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সকল প্রকার সহযােগিতা করত এবং গণহত্যায় ইন্ধন যােগাত। পাকবাহিনী রাজাকারদের সহযােগিতায় গােয়ালন্দঘাট থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত ব্যাপক অগ্নিসংযােগ ও গুলি করতে-করতে রাজবাড়ী অনুপ্রবেশ করে এবং খানখানাপুরে ক্যাম্প স্থাপন করে। তাদের সহায়তায় অবাঙালি বিহারি এবং স্থানীয় অন্য দোসররা মুক্তিযােদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড শুরু করে।
১১ই মে হানাদার বাহিনীর সহযােগী খানখানাপুরের বিহারিরা গােয়ালন্দ মােড়ের আলাদিপুর গ্রামের ডা. কালিপদ ভট্টাচার্যের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়ির লােকজনকে এলােপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। তাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে কালিপদ ডাক্তারের শিশুপুত্রও রক্ষা পায়নি। এমনকি খানখানাপুর থেকে আশ্রয়ে আসা তার বােন ও ভগ্নিপতিও হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ বাড়িতে ৬ জনকে হত্যা করা হয়। আহত হয় আরাে কয়েকজন। এ গণহত্যায় শহীদরা হলেন- ডা. কালিপদ ভট্টাচার্য (পিতা অক্ষয় কুমার ভট্টাচার্য), তপন কুমার ভট্টাচার্য (পিতা ডা. কালিপদ ভট্টাচার্য), উষারানী ভট্টাচার্য (স্বামী ডা. কালিপদ ভট্টাচার্য), সবলা বালা ভট্টাচার্য (স্বামী অক্ষয় কুমার ভট্টাচার্য), অনীল কুমার চৌধুরী (পিতা অক্ষয় কুমার চৌধুরী) এবং অবনী রানী চৌধুরী (স্বামী অনীল কুমার চৌধুরী)। [জগন্নাথ বড়য়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড