আমিশাপাড়া প্রতিরােধ যুদ্ধ
আমিশাপাড়া প্রতিরােধ যুদ্ধ (সােনাইমুড়ি, নােয়াখালী) সংঘটিত হয় ২৪শে জুলাই। এতে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং অবশিষ্টরা পালিয়ে যায়। তাদের ফেলে যাওয়া ১৯টি চাইনিজ রাইফেল মুক্তিবাহিনীর হস্তগত হয়।
আমিশাপাড়ার যুদ্ধ নােয়াখালী জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। আমিশাপাড়ায় ছিল মুক্তিযােদ্ধাদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি এবং মুক্তি সংগ্রামের কেন্দ্রস্থল। এ ঘটিকে দুর্বল করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী বারবার আক্রমণ পরিচালনা করে। কিন্তু প্রতিবারই তারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ঘটনার দিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দুই কোম্পানি সৈন্য ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে আমিনবাজার হয়ে আমিশাপাড়ার দিকে অগ্রসর হয়। এ খবর যখন আমিশাপাড়ায় পৌছায়, তখন সুবেদার ওয়ালীউল্লা ও হাবিলদার জালালের প্লাটুন ক্যাম্পে অবস্থান করছিল। তারা বিনা বাধায় পাকিস্তানি বাহিনীকে আমিশাপাড়ায় ঢুকতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সুবেদার ওয়ালীউল্লার নেতৃত্বে মুক্তিসেনারা অসীম সাহসে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৭ ঘণ্টাব্যাপী উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। এতে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং অবশিষ্টরা তাদের সহযােগীদের লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। তাদের ফেলে যাওয়া ১৯টি চাইনিজ রাইফেল মুক্তিবাহিনীর হস্তগত হয়।
আমিশাপাড়া যুদ্ধের সফলতা মুক্তিযােদ্ধাদের নতুন মাত্রায় শক্তি ও প্রেরণা জোগায়। হানাদার বাহিনী এ-যুদ্ধে চরম বিপর্যয় সত্ত্বেও এর প্রতিশােধ নিতে আর কোনাে অপারেশনের উদ্যোগ নিতে সাহস করেনি। [মাে. ফখরুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড