You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক আয়েজউদ্দিন আহমেদ - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক আয়েজউদ্দিন আহমেদ

আয়েজউদ্দিন আহমেদ, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৩) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৩৩ সালের ১লা এপ্রিল বরিশাল জেলার কৃষ্ণকাঠীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মফিজ উদ্দিন মুসুল্লি এবং মাতার নাম চন্দ্রবান বিবি। তিনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন।
আয়েজউদ্দিন আহমেদের কর্মজীবন শুরু হয় ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস)-এ চাকরির মধ্য দিয়ে। চাকরিতে যােগদানের পর তিনি ঢাকার পিলখানা থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি চট্টগ্রামের হালি শহরে ইপিআর উইং-এ নায়েব সুবেদার পদে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় পাকবাহিনীর গণহত্যার পর চট্টগ্রামের যেসব ইপিআর সদস্য বিদ্রোহ করেন, আয়েজউদ্দিন আহমেদ ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তিনি ২৬শে মার্চ থেকে অস্ত্রহাতে যুদ্ধ শুরু করেন এবং ১ নং সেক্টরের অধীনে চট্টগ্রাম জেলা, চট্টগ্রাম বন্দর ও ফেনীর ছাগলনাইয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি চট্টগ্রামে পাকিস্তানিদের নেভি ক্যাম্প ধ্বংস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এপ্রিল মাসে ছাগলনাইয়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণে তিনি অংশ নেন। এসময় তিনি পাকবাহিনীর প্রতিআক্রমণে আহত হন এবং ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি পুনরায় যুদ্ধে যােগ দেন। যুদ্ধক্ষেত্রে সাহস ও দেশপ্রেমের জন্য আয়েজউদ্দিন আহমেদ সকলের প্রশংসা অর্জন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আয়েজউদ্দিন আহমেদকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নং ৪৩৪, খেতাবের সনদ নং ১৮৪)। মুক্তিযুদ্ধের পর আয়েজউদ্দিন আহমেদ বিডিআর-এ যােগ দেন এবং এক পর্যায়ে সুবেদার মেজর পদে উন্নীত হন। এ-পদে থাকা অবস্থায়ই তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
আয়েজউদ্দিন আহমেদ ব্যক্তিজীবনে তিন কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর দুই স্ত্রী – রানী বেগম ও রেনু বেগম। তিনি বর্তমানে বরিশাল শহরের রূপাতলীতে বসবাস করছেন। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড