You dont have javascript enabled! Please enable it! শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আমির হােসেন - সংগ্রামের নোটবুক

শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আমির হােসেন

আমির হােসেন, বীর প্রতীক (শহীদ ১৯৭১) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি কিশােরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার কালিকা প্রসাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভৈরব-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে ভৈরর শহর থেকে প্রায় ৭ কিলােমিটার দূরে এ গ্রামের অবস্থান। তাঁর পিতার নাম আনসার আলী সরকার এবং মাতার নাম খােরশিদ বেগম। তিনি স্থানীয় কালিকা প্রসাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।
আমির হােসেন পুলিশ বাহিনীর কনস্টেবল পদে যােগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। একজন সাহসী পুলিশ সদস্য হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আহ্বানে অনুপ্রাণিত হয়ে পুলিশের চাকরি পরিত্যাগ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং জুন মাসে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। অক্টোবর মাসে মেজর কে এম সফিউল্লাহ, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে ‘এস’ ফোর্স গঠিত হলে তিনি তাতে যােগ দেন। এ ফোর্সের ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার মেজর মইনুল হােসেন চৌধুরীর অধীনে তিনি যুদ্ধ করেন। তাঁর কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন লে. মােহাম্মদ ইব্রাহীম।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি বড় অংশ এস ফোর্সের অধীনে ছিল। এস ফোর্সের একজন যােদ্ধা হিসেবে আমির হােসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন যুদ্ধ অংশে নেন। এ জেলার নবীনগর, খরমপুর, আখাউড়া, আজমপুর ইত্যাদি স্থানে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে পরিচালিত একাধিক যুদ্ধে আমির হােসেন সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেন। আখাউড়ার রেলওয়ে জংশন, রেলওয়ে রেস্ট হাউজ ও আজমপুরে পাকবাহিনীর শক্তিশালী ক্যাম্প ছিল। আখাউড়া অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত করার জন্য মুক্তিযােদ্ধারা ৪ঠা ডিসেম্বর আজমপুরে অবস্থিত পাকসেনাদের ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। এ ক্যাম্পে অনেক রাজাকারও ছিল। পাকসেনা ও রাজাকাররা পাল্টা আক্রমণ করলে এখানে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করার সময় আমির হােসেন শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শন এবং জীবনদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আমির হােসেনকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪০৫, খেতাবের সনদ নম্বর ১৫৫)। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড