You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক আব্দুল হালিম

আব্দুল হালিম, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৩) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৩৩ সালের ৩০শে জুন নােয়াখালী জেলার চাটখিল থানার খালিশপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আহমদ আলী এবং মাতার নাম জয়নব বানু। তিনি প্রথমে খালিশপাড়া ভূঁইয়া বাড়ি স্কুলে এবং পরে শাহাপুর। প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৯৫১ সালে তিনি ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস)-এ সৈনিক হিসেবে যােগ দেন। ১৯৭১ সালে তিনি ইপিআর দিনাজপুর হেডকোয়ার্টার্সে হাবিলদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৬শে মার্চ পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন এবং দিনাজপুরে কয়েকটি প্রতিরােধ যুদ্ধে অংশ নেন।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে রংপুর-সৈয়দপুর-দিনাজপুর সড়কের দশমাইল নামক স্থানে ইপিআর ও ছাত্র-যুবকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলে। এ বাহিনীর একজন সৈনিক ছিলেন আব্দুল হালিম। তিনি এন্টিট্যাংক গান অপারেটর ছিলেন। সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে পাকবাহিনীর একটি ট্যাংক-বহর আর্টিলারি গান ও ২৬ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স নিয়ে শহর অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার সময় মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে তাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এযুদ্ধে আব্দুল হালিম বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের ভারী অস্ত্রের সামনে মুক্তিযােদ্ধারা টিকতে না পারায় ১৬ই এপ্রিল দিনাজপুরের পতন হয়। আব্দুল হালিম মুক্তিযােদ্ধা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজ এলাকা নােয়াখালী চলে আসেন। তিনি নােয়াখালীর জোর রায়গঞ্জ ও দত্তপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দত্তপাড়ার যুদ্ধে রাজাকার কমান্ডার ননী চেয়ারম্যান নিহত হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আব্দুল হালিমকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নং ৪৪৫, খেতাবের সনদ নং ১৯৫)। মুক্তিযুদ্ধের পর আব্দুল হালিম সেনাবাহিনীতে যােগ দেন এবং ১৯৭৪ সালে সার্জেন্ট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই কন্যা ও পাঁচ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম হাজেরা বেগম। বর্তমানে তিনি খালিশপাড়ার নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!