You dont have javascript enabled! Please enable it!

নায়েক সুবেদার ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর বিক্রম আব্দুস সালাম

আব্দুস সালাম, বীর বিক্রম নায়েক সুবেদার ও শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ফেনী জেলার মাে. আলী বাজার সংলগ্ন মধ্যম কাছাড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম ফাতেমা বেগম এবং পিতার নাম দারগ আলী মিস্ত্রি। তিনি নিজ গ্রামের বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
১৯৭১ সালে আব্দুস সালাম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে নায়েক সুবেদার পদে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে তিনি দুমাসের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে তিনি কর্মস্থলে ফিরে না গিয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যােগদান করেন। প্রথমে তিনি কুমিল্লার পূর্ব দিকে ত্রিপুরা মুক্তিযােদ্ধা যুব শিবিরে কিছুদিন মুক্তিযােদ্ধাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুস সালাম কুমিল্লার ২ নম্বর সেক্টরে খালেদ মােশাররফের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন। তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে কুমিল্লার সালদা নদী অঞ্চলে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯শে জুন তিনি সহযােদ্ধাদের নিয়ে সালদা নদী এলাকায় কৈখােলা নামক স্থানে পাকবাহিনীর শক্তিশালী অবস্থানে আক্রমণ করলে ৩১ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং বিপুল অস্ত্র মুক্তিযােদ্ধাদের দখলে আসে। ৫ই আগস্ট পাকসেনারা সালদা নদী ও শশীদল রেলস্টেশনের পশ্চিম পাশে অবস্থান নেয়। এ খবর পেয়ে আব্দুস সালামের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা সেখানে উপস্থিত হলে ব্যাপক গােলাগুলি হয়। কিছুক্ষণ পর গােলাগুলি বন্ধ হয়ে গেলে আব্দুস সালাম প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য সামনে অগ্রসর হন। এ-সময় হঠাৎ পাকবাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে তিনি শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানসহ অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়।
আব্দুস সালাম ১ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মিসেস ফাতেমা বেগম। ১৯৭১ সালের ৫ই আগস্ট এ বীর মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!