You dont have javascript enabled! Please enable it! হাবিলদার ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আব্দুল লতিফ - সংগ্রামের নোটবুক

হাবিলদার ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আব্দুল লতিফ

আব্দুল লতিফ, বীর প্রতীক (১৯৪৬-১৯৭১) হাবিলদার ও শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৪৬ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মহেশপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম লিল মিঞা এবং মাতার নাম গােলাপী খাতুন। তিনি ২৫শে মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে হাবিলদার পদে কর্মরত ছিলেন। ১৫ই এপ্রিল কৌশলে সেনানিবাস ত্যাগ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। তিনি প্রথমে ২ নম্বর সেক্টরে এবং পরবর্তীতে মেজর সফিউল্লাহর নেতৃত্বে ‘কে’ ফোর্স গঠিত হলে ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীনে যুদ্ধ করেন। তার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন আব্দুল গাফফার হালদার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রবাহিত সালদা নদী। সালদা নদীর পূর্ব পাড় মন্দভাগ ছিল মুক্তিযােদ্ধাদের দখলে। অপরদিকে পশ্চিম পাড়ের কাছাকাছি ছিল পাকসেনাদের অবস্থান। অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বেলুচ রেজিমেন্টের একটি বড় দল সালদা নদীর পাড়ে সমবেত হয়। পাকহানাদাররা যে-কোনাে সময়ে মন্দভাগ আক্রমণ করতে পারে এ আশঙ্কায় মুক্তিযােদ্ধারা তাদের প্রতিহত করবার সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযােদ্ধারা ছিলেন ৩টি ২৪৬ দলে বিভক্ত। এর একটি দলে ছিলেন হাবিলদার আব্দুল লতিফ। ২৩শে অক্টোবর রাতে (ঘড়ির কাঁটা অনুসারে ২৪শে অক্টোবর) মুক্তিযােদ্ধাদের একটি দল সালদা নদী রেলস্টেশনের পূর্বদিকে পাহাড়ি এলাকায়, একটি দল সালদা নদী ও গুদাম ঘরের পশ্চিমে নদী অতিক্রম করে এবং অপর দলটি পাকসেনাদের পেছনে অবস্থান নেয়। এরপর তিনদিক থেকে একযােগে পাকসেনাদের ওপর মুক্তিযােদ্ধাদের আক্রমণ চলে। আব্দুল লতিফ ছিলেন নদী অতিক্রমকারী দলে। তাঁরা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে পাকসেনাদের কয়েকটি বাংকার ধ্বংস করেন। সহযােদ্ধাদের সঙ্গে সামনে এগুতেই পাকসেনাদের ছােড়া এক ঝাঁক বুলেটে আব্দুল লতিফ বিদ্ধ হন এবং সঙ্গে-সঙ্গে শাহাদত বরণ করেন। তাঁর এ আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড