যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আব্দুল হক
আব্দুল হক, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৫৪) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৫৪ সালের ১লা জানুয়ারি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার হােসেনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আলতাফ আলী এবং মাতার নাম জুলেখা বিবি। তিনি চৌমুহনীর কাশীনগর বি এম হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন।
আব্দুল হক ১৯৬৯ সালের ১৫ই মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যােগদান করেন। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ফার্স্ট ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যশাের সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ ও গণহত্যা শুরুর সময় তিনি নিজ বাড়িতে ছুটিতে ছিলেন। এর পরপর তিনি বিভিন্ন স্থানে প্রতিরােধযুদ্ধে অংশ নেন। এক পর্যায়ে তিনি ভারতের মেঘালয় প্রদেশের তেলঢালায় গিয়ে ফার্স্ট ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে মিলিত হন। তিনি আগস্ট মাসে রংপুর জেলার কোদালকাঠির সম্মুখ যুদ্ধে ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভারতের গৌহাটি সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সুস্থ হয়ে তিনি আবারাে আগরতলার আমতলীর নিজ ইউনিটে যােগদান করেন। এরপর তিনি জামালপুর জেলার কামালপুর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ‘জেড’ ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম-এর অধীনে যুদ্ধ করেন। তাঁর কোম্পানি অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আব্দুল হককে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। আব্দুল হক ১৯৯৯ সালে অনারারি ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং ২০০২ সালে অবসরে যান। তাঁর স্ত্রীর নাম ফজিলাতেন নেছা। এ দম্পতি ৩ পুত্র সন্তানের জনক-জননী। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড