You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক আব্দুল মমিন - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক আব্দুল মমিন

আব্দুল মমিন, বীর প্রতীক (১৯৫৩-১৯৭১) বীর মুক্তিযােদ্ধা ও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ। তিনি ১৯৫৩ সালের ১১ই মার্চ কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার সহিলপুর ইউনিয়নের পিপুইয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল মােতালেব এবং মাতার নাম তৈয়বুন নেছা। তিনি কচুয়া থানার রাগদইল আই এন হাইস্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে বিজ্ঞানে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি পাস করেন। এরপর তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে আইএসসি-তে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি-সচেতন ও সাহসী তরুণ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর বিরুদ্ধে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন।
২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে আব্দুল মমিন মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। কুমিল্লা এলাকার একাধিক প্রতিরােধ যুদ্ধে তিনি অংশ নেন। এপ্রিল মাসে তিনি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের আগরতলায় যান। সেখানে ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ সেক্টরের কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনি বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। কুমিল্লা-আখাউড়া ও কুমিল্লাঢাকা এলাকার বিভিন্ন সড়কসেতু ধ্বংস করার অপারেশনে তিনি অংশ নেন। ১৩ই ডিসেম্বর আব্দুল মমিনের গ্রামের বাড়ি থেকে ৩ কিলােমিটার উত্তরে অবস্থিত ইলিয়টগঞ্জে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযােদ্ধাদের এক সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে আব্দুল মমিন শত্রুসেনাদের গুলিতে শহীদ হন। যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পাকসেনারা পরাজিত হলে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধুর সরকার আব্দুল মমিনকে ‘বীর প্রতীক’ (মরণােত্তর) খেতাবে ভূষিত করে। পারিবারিক কবর স্থানে থাকা তার সমাধি সংরক্ষিত হয়েছে। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড