You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক আব্দুল মালেক

আব্দুল মালেক, বীর প্রতীক (১৯২৬-২০০৫) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯২৬ সালের ২রা জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর থানার গােকর্ণ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে ৩ কিলােমিটার দক্ষিণে এ গ্রামের অবস্থান। আব্দুল মালেকের পিতার নাম করম উদ্দিন এবং মাতার নাম পংখিরাজ বেগম। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। তিনি ছােট বেলা থেকেই খুব সাহসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আব্দুল মালেক ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর)-এ যােগদানের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। চাকরির শুরুতে তিনি ঢাকা ও যশােরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে তিনি ইপিআর-এর যশাের উইং-এ নায়ক সুবেদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। তিনি ২৭শে মার্চ যশাের ইপিআর হেডকোয়ার্টার্সে নিজহাতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। বিদ্রোহ করার পর তাঁরা যশােহরের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরােধ যুদ্ধে অংশ নেন। ১২ই এপ্রিল লাউজানিতে এবং ২৪শে এপ্রিল কাগজপুরে তিনি পাকসেনাদের বিরুদ্ধে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যশােরের পতন হলে বেনাপােল দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর আব্দুল মালেক ৮ নম্বর সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত হন। এ সেক্টরের অধীনে প্রথমে মেজর আবু ওসমান চৌধুরী ও পরে মেজর এম আবুল মঞ্জুরের নেতৃত্বে তিনি যুদ্ধ করেন। এ সেক্টরের বিভিন্ন অপারেশনে তিনি বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। একাধিক অপারেশনে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আব্দুল মালেককে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪২৬, খেতাবের সনদ নম্বর ১৭৬)।
স্বাধীনতার পর আব্দুল মালেক বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এ যােগদান করেন। তিনি ১৯৭৪ সালে সুবেদার হিসেবে বিডিআর থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং ২০০৫ সালের ১২ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
আব্দুল মালেক ৪ কন্যা ও ৭ পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। তার দুই স্ত্রী, ফাতেমা বেগম ও আংগুরা বেগম। বর্তমানে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার দক্ষিণ পইলতলা নামক স্থানে বসবাস করছেন। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!