বীর প্রতীক আব্দুল নুর
আব্দুল নুর, বীর প্রতীক নায়েক ও ২ নম্বর সেক্টরের শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা। তাঁর জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার বাহাদুরপুরে। তাঁর পিতার নাম আশ্রব আলী ও মাতার নাম কনাই বিবি। একজন ননকমিশন্ড অফিসার হিসেবে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরিকালে তিনি বাঙালি সৈন্যদের প্রতি পাকিস্তানি সেনাকর্মকর্তাদের চরম অবজ্ঞা ও বৈষম্যমূলক আচরণ প্রত্যক্ষ করেন। ৭০-এর নির্বাচনের ফলাফল উপেক্ষা করে ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ার নৃশংস ঘটনা তাঁকে বিদ্রোহী করে তােলে। তিনি দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে অংশগ্রহণে মনেমনে সংকল্প গ্রহণ করেন। সে লক্ষ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানের শিয়ালকোট ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে এসে মেজর খালেদ মােশাররফ, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বাধীন ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন।
এরপর তাঁকে ৯ম ইস্ট বেঙ্গলের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। এর অধীনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন আইন উদ্দিন। তিনি কসবা এলাকার বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেয়ার পর লাতুমুড়া ও চন্দ্রপুর যুদ্ধে অংশ নেন। কসবার উত্তরে লাতুমুড়ার পাশে চন্দ্রপুরে ছিল পাকহানাদার বাহিনীর এক দুর্ভেদ্য ঘাটি। ২৭শে নভেম্বর ক্যাপ্টেন আইন উদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা এ ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালান। এখানকার যুদ্ধে শত্রুপক্ষের গােলার আঘাতে নায়েক আব্দুল নূর শাহাদত বরণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মােৎসর্গ ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নায়েক আব্দুল নূরকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন ১ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম জহুরা বিবি। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড