You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর বিক্রম আব্দুল খালেক

আব্দুল খালেক, বীর বিক্রম (জন্ম ১৯৪৪) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৪৪ সালের ২৩শে জানুয়ারি রাজশাহী জেলার গােদাগাড়ী উপজেলার চাপাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কামির উদ্দিন মণ্ডল, মাতা গােলজান বিবি।
সম্রান্ত পরিবারের সন্তান আব্দুল খালেক স্থানীয় প্রেমতলী হাইস্কুল থেকে ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং প্রেমতলী কলেজ থেকে ১৯৬৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। এরপর আব্দুল খালেক ১৯৬৩ সালের ১লা জুন। পাকিস্তান নৌ বাহিনীতে সী-ম্যান পদে যােগদান করেন। বাবামা’র ইচ্ছায় ১৯৬৯ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। ২৫শে মার্চ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা এবং ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘােষণার পর তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সামরিক প্রশিক্ষণ থাকায় স্থানীয় ছাত্র-যুবকদের সংগঠিত করে প্রশিক্ষণ দান করেন। তিনি ৭ নম্বর সেক্টরে অন্তর্ভুক্ত হন এবং ভারতের লালগােলা ক্যাম্পে অবস্থান করেন। সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেন। অনেকগুলাে যুদ্ধে আব্দুল খালেক বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এগুলাের মধ্যে চাপাইনবাবগঞ্জ হরিপুর ব্রিজ অপারেশন, নবাব জায়গীর অপারেশন, বিবিরপুর ১২ মাইল ব্রিজ যুদ্ধ, প্রেমতলী খেতুর গ্রাম যুদ্ধ উল্লেখযােগ্য। ৫ই সেপ্টম্বর প্রেমতলী খেতুর গ্রাম যুদ্ধে আবদুল খালেক বুকে গুলিবিদ্ধ হন। ভারতের বহরমপুর, ব্যারাকপুর প্রভৃতি স্থানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাংলাদেশে এসে ১০ই ডিসেম্বর আবার যুদ্ধে অংশ নেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০২০ মাে. আবদুল খালেককে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়। স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থান করে পারিবারিক কৃষিকাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে মনােনিবেশ করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি স্বাধীনতাবিরােধীদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হন। ২০২০ সালের ৬ই জুন প্রকাশিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযােদ্ধাদের গেজেটে আবদুল খালেকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। তাঁর স্ত্রীর নাম মাসুরা খাতুন। তিনি ২ কন্যা এবং ২ পুত্র সন্তানের জনক। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!