You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক আব্দুল ওয়াজেদ

আব্দুল ওয়াজেদ, বীর প্রতীক (১৯৩২-২০১৩) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৩২ সালের ৩রা মার্চ ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের বিষ্ণুদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ইয়াছিন উদ্দিন হাওলাদার এবং মাতার নাম লতিফুন নেসা। তিনি স্থানীয় স্কুলে অধ্যয়ন করেন। আব্দুল ওয়াজেদের কর্মজীবন শুরু হয় ইপিআর (ইস্ট পকিস্তান রাইফেলস)-এ চাকরির মধ্য দিয়ে। চাকরিতে যােগ দেয়ার পর তিনি ঢাকার পিলখানা থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ইপিআর-এর নায়েক হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে আব্দুল ওয়াজেদ যশাের সেক্টরের হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত ছিলেন। তখন যশাের হেডকোয়ার্টার্সে বাঙালি ইপিআর সদস্য ছিলেন মাত্র ৭০ জন। ২৫শে মার্চ পাকবাহিনী নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে তিনি অন্য বাঙালিদের সঙ্গে বিদ্রোহ করেন এবং অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরােধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৩০শে মার্চের পর আব্দুল ওয়াজেদ ও অন্যরা যশাের শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান গ্রহণ করেন। পরে পাকবাহিনী ইপিআর-এর এসব প্রতিরক্ষা অবস্থানে আক্রমণ করে। তারাও প্রতিরােধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আব্দুল ওয়াজেদ ও অন্যদের সাহসিকতাপূর্ণ লড়াইয়ের কারণে। তখন শত্রুপক্ষের অনেকে হতাহত হয়। এক পর্যায়ে প্রতিরােধ যােদ্ধারা অবস্থান ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হন। সেক্টরভিত্তিক যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে বেনাপােল, ঝিকরগাছা ও নাভারনে সংঘটিত অনেক সম্মুখ যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আব্দুল ওয়াজেদকে বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (তার গেজেট নম্বর ৪৭৫, খেতাবের সনদ নম্বর ২২৫)।
মুক্তিযুদ্ধের পর আব্দুল ওয়াজেদ বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এ যােগদান করেন। বিডিআর থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ঝালকাঠির নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। ২০১৩ সালের ২৮শে জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ৫ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম রাজিয়া বেগম। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!