You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর বিক্রম, নায়েক ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা আব্দুর রব চৌধুরী - সংগ্রামের নোটবুক

আব্দুর রব চৌধুরী

আব্দুর রব চৌধুরী, বীর বিক্রম নায়েক ও শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি নােয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার নােয়াখােলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাে. আকরাম উদ্দিন এবং মাতার নাম আকরামজান বানু। আব্দুর রব চৌধুরী ছাত্রাবস্থায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীতে যােগ দেন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইএমই কোরে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি ছুটিতে বাড়িতে ছিলেন। তিনি ছিলেন গভীর দেশপ্রেমে উজ্জীবিত। ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-এর নিরঙ্কুশ বিজয় সত্ত্বেও ক্ষমতা হস্তান্তরে ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তার ষড়যন্ত্র ও কূটকৌশলের আশ্রয় গ্রহণ অন্যান্য বাঙালিদের মতাে তাঁকেও ক্ষুব্ধ করে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি ভীষণভাবে উদ্দীপ্ত হন। ২৫শে মার্চ কালরাতে নিরীহ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সশস্ত্র আক্রমণ তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দিতে উদ্বুদ্ধ করে। মুক্তিযুদ্ধে যােগ দিয়ে তিনি প্রথমে মেজর খালেদ মােশাররফ, বীর উত্তম এবং ২৩শে অক্টোবর কসবার যুদ্ধে তিনি আহত হলে মেজর এ টি এম হায়দারের নেতৃত্বে ২নং সেক্টরের রাজনগর সাব-সেক্টরে নােয়াখালীর বিস্তির্ণ এলাকার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য ছিল বেলােনিয়ার যুদ্ধ। এখানে একাধিকবার পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়। এর সকল যুদ্ধে আব্দুর রব চৌধুরী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ৫ই ডিসেম্বর এখানে সর্বশেষ ও ভয়াবহ যুদ্ধে শত্রুপক্ষের গুলিতে মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়ার পথে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে আব্দুর রব চৌধুরীর আত্মত্যাগ ও অসামান্য বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর বিক্রম’ (মরণােত্তর) খেতাবে ভূষিত করে। তিনি ৩ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম হােসনে আরা বেগম। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড