বীর প্রতীক আব্দুর রশিদ
আব্দুর রশিদ, বীর প্রতীক (মৃত্যু ২০০৮) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার তন্তর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সুন্দর আলী ভূঁইয়া এবং মাতার নাম করফুলের নেসা।
আব্দুর রশিদ তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল)-এ চাকরির মধ্য দিয়ে। ইপিআর-এর চাকরির কারণে তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ইপিআর হাবিলদার হিসেবে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
সামরিক প্রশিক্ষণ ও কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা ১৯৭১ সালে তাঁকে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রভূত সহায়তা করে। মেজর তাহেরের নেতৃত্বাধীন ১১ নম্বর সেক্টরের তিনি একজন যােদ্ধা ছিলেন। এ সেক্টরের বিভিন্ন সম্মুখ যুদ্ধে তিনি বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। আব্দুর রশিদ পাকবাহিনীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে অনেকবার তাদের পর্যুদস্ত করতে সক্ষম হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আব্দুর রশিদকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪৫৮, খেতাবের সনদ নম্বর ২০৮)।
মুক্তিযুদ্ধের পর আব্দুর রশিদ বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এ যােগদান করেন। ১৯৮২ সালে তিনি বিডিআর থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি এলাকায় একজন সৎ ও পরােপকারী মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বীর মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে তাকে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা করত। তন্তর বাসস্ট্যান্ড ও তন্তর গ্রামের মধ্যবর্তী রাস্তাটি বীর প্রতীক আব্দুর রশিদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ৩ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম খােদেজা বেগম।
বীর মুক্তিযােদ্ধা আব্দুর রশিদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০০৮ সালের ২২শে জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড