বীর প্রতীক আবুল কালাম
আবুল কালাম, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪১) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৪১ সালে কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট উপজেলার ভাদ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাে. ইদ্রিস ভূঁইয়া ও মাতার নাম আংকুর নেছা। তাঁর স্ত্রীর নাম রিজিয়া বেগম।
আবুল কালাম ১৯৭১ সালে সৈয়দপুর সেনানিবাসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। সে বছর ২৬শে মার্চ বিদ্রোহ করে তিনি প্রতিরােধযুদ্ধে যােগ দেন এবং বগুড়া-রংপুর সড়ক অবরােধকারী বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে অবস্থান নেন। ২৮শে মার্চ এ সড়ক ধরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৩ ফিল্ড রেজিমেন্টের একদল সৈন্য অগ্রসর হচ্ছিল। প্রতিরােধযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অন্যান্যদের সঙ্গে আবুল কালাম তাদের ওপর আক্রমণ করে পাশ্চাদপসরণে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে তিনি ১১নং সেক্টরের মানকার চর সাব-সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন। তাঁর যুদ্ধ এলাকার অন্তর্ভুক্ত স্থানসমূহ ছিল পলাশবাড়ি, পীরগঞ্জ, কোদালকাঠি, চিলমারী, রৌমারী, উলিপুর দেওয়ানগঞ্জ ইত্যাদি। ১৯৭১-এর অক্টোবর মাসে চিলমারী মুক্ত করার যুদ্ধে তিনি অসম সাহসিকতার পরিচয় দেন। এ-যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, ইপিসিএফ, রাজাকার ও পুলিশসহ পাকবাহিনীর প্রায় ১০০ জন মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মুক্তিযােদ্ধা আবুল কালাম-কে ‘বীর প্রতীক রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করা হয়। স্বাধীনতার পর তিনি সেনাবাহিনীতে কাজ অব্যাহত রাখেন এবং পদোন্নতি পেয়ে হাবিলদার পদে উন্নীত হন। [এস এম মাহফুজুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড