You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক আবু ছালেক - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক আবু ছালেক

আবু ছালেক, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৫৪) যুদ্ধাহত বীর কিশাের মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৫৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার টানমান্দাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শহীদ আবুল হাসেম এবং মাতার নাম মাজেদুন নেছা।
আবু ছালেক ৭ম শ্রেণির ছাত্র অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যােগদান করেন। ৩০শে এপ্রিল তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান। ভারতের অম্পিনগরে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ২নং সেক্টরের ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। হাবিলদার আবদুল হানিফের নেতৃত্বে আবু ছালেক কসবা উপজেলার মনিয়ন্দ গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এরপর তিনি কসবা হাইস্কুলের কাছাকাছি চন্দ্রপুর গ্রামে বাংকার খনন করে অবস্থান নেন। হানাদার বাহিনী এ খবর জানতে পেরে রাতে তাঁদের অবস্থানের ওপর গুলি চালায়। এক পর্যায়ে তারা মর্টার থেকে গােলাবর্ষণ শুরু করে। আবু ছালেক তখন নিজের জীবন বাজি রেখে হানাদারদের ওপর গুলিবর্ষণ অব্যাহত রেখে সহযােদ্ধাদের নিয়ে পিছিয়ে আসতে সক্ষম হন।
২২শে নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার চণ্ডিদার বাজার সংলগ্ন লাতুয়াগােড়া নামক স্থানে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে আবু ছালেকের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযােদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। শত্রুপক্ষের শেলের স্পিন্টার এসে পেটে ও হাতে লেগে আবু ছালেক মারাত্মকভাবে আহত হন। সহযােদ্ধারা তাকে ভারতের গৌহাটি হাসপাতালে পাঠান। ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে তিনি স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আবু ছালেক-কে বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। যুদ্ধকালে তাঁকে সেনাবাহিনীর সদস্যে মর্যাদা দেয়া হয় এবং স্বাধীনতার পর তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম মঞ্জুয়ারা রিপন। এ দম্পতি ২ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক-জননী। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড