You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক আবদুল বাতেন সরকার - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক আবদুল বাতেন সরকার

আবদুল বাতেন সরকার, বীর প্রতীক (১৯৫১-২০০৭) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৫১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার ছিটলক্ষ্মণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবদুল কুদ্দুস সরকার ও মাতার নাম রাহেলা বেগম। তাঁর স্ত্রীর নাম সাজেদা বেগম।
১৯৭১ সালে সিপাহি আবদুল বাতেন সরকার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল সৈয়দপুর সেনানিবাস। মার্চের প্রথম দিকে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা বাঙালি সেনাসদস্যদের বেশির ভাগকে সেনানিবাসের বাইরে মােতায়েন করলেও তিনি সেনানিবাসের অভ্যন্তরেই দায়িত্বরত ছিলেন। ২৬শে মার্চ দেশজুড়ে পাকিস্তানিদের হামলা-নির্যাতন শুরু হলে বাঙালি সেনাদের অন্য প্রায় সবার সঙ্গে তিনিও বিদ্রোহ ঘােষণা করেন এবং পালিয়ে গিয়ে প্রতিরােধযুদ্ধে যােগ দেন। তিনি শুরুর দিকে রৌমারী, চিলমারী, সৈয়দপুর প্রভৃতি স্থানে এবং পরবর্তীতে সিলেট এলাকায় যুদ্ধ করেন।
আবদুল বাতেন ১৯৭১ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি লে. কর্নেল এস আই এম নূরুন্নবী খান, বীর বিক্রম-এর নেতৃত্বে অন্যান্য মুক্তিযােদ্ধাসহ ছাতক আক্রমণ করেন। নিজে মেশিনগান ব্যবহার করে সহযােদ্ধাদের নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের অগ্রযাত্রা রােধ করেন। প্রথম আঘাতে পাকিস্তানি সেনাদের বেশ কয়েকজন নিহত হয়। তারা মৃতদেহগুলি ফেলে রেখে পশ্চাদপসরণ করলেও পরবর্তীতে নতুন শক্তি নিয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালায়। বাতেন সরকার ও তাঁর কমান্ডার নূরুন্নবী খানের অধীনে যুদ্ধরত সহযােদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে সে আক্রমণ প্রতিহত করেন। পাকিস্তানি সেনারা পরাস্ত হয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য আব্দুল বাতেন সরকার-কে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যােগ দেন। তিনি ২০০৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর ৩ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। [এস এম মাহফুজুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড