You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.31 | আবদুরপাড়া গণহত্যা (চট্টগ্রাম মহানগর) - সংগ্রামের নোটবুক

আবদুরপাড়া গণহত্যা

আবদুরপাড়া গণহত্যা (চট্টগ্রাম মহানগর) সংঘটিত হয় ৩১শে মার্চ। চট্টগ্রাম শহরের হালিশহরের মধ্যম নাথপাড়ার পাশের গ্রাম আবদুরপাড়া। এটি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। ঘটনার দিন ইপিআর সদস্যসহ অনেক বাঙালিকে এখানে হত্যা করা হয়। এদিন হালিশহর ইপিআর ক্যাম্পের বাঙালি সৈনিকদের প্রতিরােধ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে পুরাে এলাকা পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। বাঙালি ইপিআর সদস্যরা তখন আত্মরক্ষার্থে পার্শ্ববর্তী মধ্যম নাথপাড়া ও আবদুরপাড়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। এখানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ-এর শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। এজন্য পাকবাহিনী ও বিহারিদের আক্রোশও ছিল বেশি। তাছাড়া এ পাড়ার বাসিন্দারা হালিশহর এলাকায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরােধে অংশ নেয়। তাই পাকবাহিনী স্থানীয় বিহারিদের সহায়তায় আবদুরপাড়ায় আশ্রয় গ্রহণকারী ইপিআর সদস্য, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী এবং সাধারণ মানুষদের ওপর আক্রমণ চালায়। বিহারি সর্দার শওকতের প্ররােচনা ও পরামর্শে এ আক্রমণ পরিচালিত হয়। এখানে পাকবাহিনী ও বিহারিরা মিলে অনেককে হতাহত করে। সেদিন যারা আবদুরপাড়া হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তারা হলেন- আজগর আলী, আবুল হাশেম, মােহাম্মদ ইসহাক, সিদ্দিক আহমদ, বাবুল হক, আবুল খায়ের প্রমুখ। এখানে ইপিআর-এর যেসব সৈনিক শহীদ হন, তাদের লাশ পাকবাহিনী নিয়ে যায়। ফলে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি। পার্শ্ববর্তী মধ্যম নাথপাড়ায় প্রথম আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় অনেকে এ এলাকা থেকে পূর্বেই অন্যত্র সরে যেতে সক্ষম হয়েছিল। তাই নাথপাড়ার চেয়ে এখানকার ভয়াবহতা কম ছিল। হত্যাকাণ্ডের পর এখানে ব্যাপক লুণ্ঠন চলে। শেষে মানুষের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযােগ করে ভস্মীভূত করা হয়। [সাখাওয়াত হােসেন মজনু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড