You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক আবদুল খালেক

আবদুল খালেক, বীর প্রতীক (১৯৩৯-১৯৯৭) যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৩৯ সালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পূর্ব বাতাবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আমিন উদ্দিন ভূঁইয়া ও মাতার নাম নূরজাহান বিবি। তাঁর স্ত্রীর নাম আছিয়া খাতুন। ১৯৭১ সালে আবদুল খালেক পাকিস্তান ইউনাইটেড ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখায় নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রথমে প্রতিরােধ বাহিনীতে যােগ দেন। পরবর্তীতে তিনি নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের আলফা কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত হন।
আবদুল খালেক কসবা, মন্দভাগ, কইখােলা, নয়নপুর ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি স্থানে যুদ্ধ করেন। আলফা কোম্পানির সদস্য হিসেবে শুরুর দিকে তিনি মুক্তিবাহিনীর গােপন অগ্রবর্তী স্ট্যান্ডিং প্যাট্রল পার্টির সদস্য ছিলেন। তাঁর কাজ ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তৎপরতা লক্ষ করা ও মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডারের নিকট রিপাের্ট করা। মাঝেমাঝে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের ওপর মুক্তিবাহিনীর ঝটিকা আক্রমণে অংশ নিতেন। মুক্তিবাহিনী ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথে সালদা রেলস্টেশনে অবস্থিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে প্রায়ই অপারেশন চালাত। এ অপারেশনগুলাের একটিতে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে আহত হন এবং একজন সহযােদ্ধার সহায়তায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি আগরতলার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লক্ষৌর একটি হাসপাতালে পাঠানাে হয়। ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরও অনেক দিন তিনি পরিবারের কাছে নিখোঁজ ছিলেন। ধরে নেয়া হয়েছিল যে, তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রায় পাঁচ মাস পর আবদুল খালেক নিজ বাড়িতে ফেরেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য মুক্তিযােদ্ধা আবদুল খালেক-কে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বীর প্রতীক’ রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। তাঁকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নায়েক পদে নিয়ােগ দেয়া হয়। তবে যুদ্ধে আহত হবার সময় তার শরীরে থাকা শেলের টুকরা ও কয়েকটি গুলি চিকিৎসার পরও বের করা যায়নি। এক সময় তার দুটি পা হাঁটু পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। তিনি ১৯৯৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। [এস এম মাহফুজুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!