You dont have javascript enabled! Please enable it!

আনােয়ারা গণহত্যা

আনােয়ারা গণহত্যা (আনােয়ারা, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ৪ঠা অক্টোবর। এতে ৯ জন মানুষ নিহত হয়।
এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এ গ্রামে একাধিকবার লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযােগ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম হিসেবে থানা সংলগ্ন এ গ্রামে প্রতিনিয়ত
রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী টহল প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। ৪ঠা অক্টোবর রাজাকার কমান্ডার নুরুল আবছার ও নুরুল আমিনের নেতৃত্বে একদল রাজাকার আনােয়ারা গ্রামে ঢুকে পড়ে। কিছু সংখ্যক অসহায় মানুষ (বৃদ্ধ ও খেতমজুর) ছাড়া জনবহুল এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ভারতে কিংবা অন্যত্র আশ্রয় নেয়। গ্রামের মাঝখানে এককালের বিশাল জয়কালী বাজার। পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকাররা আগেই এর সবকিছু পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। কিন্তু তারপরও হিন্দু অধ্যুষিত বলে এ গ্রামের ওপর স্বাধীনতাবিরােধীরা কড়া নজর রাখে যাতে পুনরায় এসে কেউ অবস্থান করতে না পারে। কিন্তু গ্রামবাসীদের কেউ-কেউ অন্যত্র আশ্রয় নিলেও রাতের অন্ধকারে মাঝে-মাঝে শূন্য ভিটে দেখতে আসে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ৪ঠা অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে একদল রাজাকার অতর্কিতে গ্রামে প্রবেশ করে সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী স্থানীয় ডাক্তার গােপালচন্দ্র বিশ্বাসকে তার নিজ বাড়ি থেকে ধরে বাড়ির উত্তর দিকে পুকুরপাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর রাজাকাররা গ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে সুখেন্দু চৌধুরী, লালু চৌধুরী, সতীশ সেনগুপ্ত, নারায়ণ ভট্টাচার্য, রজনী চক্রবর্তী, মন্টু চক্রবর্তী, গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য ও ভােলানাথ চক্রবর্তী (টুন্টু ব্রাহ্মণ)-কে ধরে গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত জয়কালী বাজারে নিয়ে যায়। এরপর একে-একে ৮ জনকে হত্যা করে সেখানেই একটি গর্ত খুঁড়ে তাতে সকলকে মাটিচাপা দেয়। [জামাল উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!