You dont have javascript enabled! Please enable it!

আনন্দপুর চৌধুরী বাড়ি গণহত্যা

আনন্দপুর চৌধুরী বাড়ি গণহত্যা (ফুলগাজী, ফেনী) সংঘটিত হয় ১৬ই জুন দুপুর ১২টার দিকে। এতে ৫ জন নিরীহ গ্রামবাসী প্রাণ হারায়।
ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার দুটি গ্রাম উত্তর আনন্দপুর ও দক্ষিণ আনন্দপুর। দক্ষিণ আনন্দপুরের হাসানপুর প্রাইমারি স্কুলে পাকহানাদার বাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। ঘটনার দিন হানাদার বাহিনী ভারতের সীমান্তঘেঁষা উত্তর আনন্দপুরে মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে তারা দক্ষিণ আনন্দপুরে তাদের ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ক্যাম্পে যাওয়ার পথে প্রথমে তারা এ গ্রামের অধিবাসী ননা মিয়া (পিতা হােরা মিয়া)-কে গুলি করে হত্যা করে। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর তারা আলীম উদ্দিন চৌকিদারের বাড়িতে ঢুকে শারীরিক প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলামকে ছাড়া আর কাউকে না পেয়ে তাকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে। সেখান থেকে আরাে কিছুদূর গিয়ে চৌধুরী বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় হােসেন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী ও তার ভাতিজা মমতাজ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী পুকুরে গােসল করছিলেন। পাকিস্তানি হানাদাররা গােসলরত অবস্থায় এ দুজনকে ধরে এনে পুকুরের কোণায় বসায়। ২ জন পাকসেনা তাদের পাহারা দিতে থাকে এবং বেশ কয়েকজন সৈন্য হােসেন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। বাড়িতে তখন তাঁর ভাগ্নে সেরাজুল ইসলাম চৌধুরী পবিত্র কোরআন শরীফ পাঠ করছিলেন। কোরআন শরীফ পাঠরত অবস্থায় তাকেও পাকসেনারা ধরে এনে ঐ দুজনের সঙ্গে বসায়। এরপর তার ভাতিজা মকবুল আহম্মদ চৌধুরী (পিতা কলিমুদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী)-কে মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ধরে ঐ তিনজনের সঙ্গে বসায়। এরপর চৌধুরী বাড়িতে ঢুকে ঐ বাড়ির জামাই আবদুল মতিনকে ধরে আনে। এভাবে ৬ জনকে ধরে এনে এক লাইনে বসায়। এরপর হানাদার বাহিনী একসঙ্গে তাদের গুলি করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। তাদের মধ্যে ৫ জন নিহত হন এবং একজন আবদুল মতিন বেঁচে যান। চিকিৎসার জন্য গ্রামবাসী তাকে নিয়ে ভারতে যায় এবং সেখানে চোত্তাখােলা হাসপাতালে ভর্তি করে। আবদুল মতিন সুস্থ হওয়ার পর ১০ বছর বেঁচে ছিলেন। [মাে. ফখরুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!