You dont have javascript enabled! Please enable it!

আড়িয়াবাজার যুদ্ধ

আড়িয়াবাজার যুদ্ধ (শাজাহানপুর, বগুড়া) সংঘটিত হয়। ১লা এপ্রিল। এতে একজন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন। অপরদিকে আড়িয়াবাজার মিলিটারি ক্যাম্পের সেনারা মুক্তিযােদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং মুক্তিযােদ্ধারা তাদের প্রচুর এমুনিশন হস্তগত করেন। আত্মসমর্পণকৃত পাকসেনাদের বগুড়া জেলে বন্দি করে রাখা হয়। কিন্তু একজন মুক্তিযােদ্ধার শহীদ হওয়ার খবর শুনে বিক্ষুব্ধ জনতা জেলের তালা ভেঙ্গে তাদের হত্যা করে।
আড়িয়াবাজার বগুড়া শহর থেকে ১২ কিলােমিটারের মতাে দক্ষিণে অবস্থিত। এর উত্তরে বগুড়া সেনানিবাস, পূর্বে করতােয়া নদী, দক্ষিণে শেরপুর ও পশ্চিমে নন্দীগ্রাম উপজেলা। বগুড়ার মুক্তিযােদ্ধারা জানতে পারেন যে, আড়িয়াবাজার মিলিটারি ক্যাম্পে বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্র করা হয়েছে এবং তাঁদের হত্যা করা হবে। এ ক্যাম্পে একজন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ২৫ জন পাকসেনা অবস্থান করত। মুক্তিযােদ্ধারা এ ক্যাম্প দখলের পরিকল্পনা করেন। ক্যাপ্টেন গিয়াসের নির্দেশনায় ১লা এপ্রিল নায়েব সুবেদার আলী আকবরের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা আড়িয়াবাজারে অবস্থিত এমুনিশন ডাম্প আক্রমণ করেন। এমুনিশন ডাম্পের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে কাট অব পার্টি রেখে পশ্চিম দিক থেকে করতােয়া নদীকে লক্ষ্যবস্তুর পেছনে রেখে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। আড়াই ঘণ্টার মতাে স্থায়ী এ-যুদ্ধে ২০ জন মুক্তিযােদ্ধা অংশ নেন। ইপিআর, পুলিশ ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এটি পরিচালিত হয়। পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের ওপর বিমান হামলা চালালেও যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। বেলা ২টা ৩০ মিনিটের সময় পাকিস্তানি বাহিনী সাদা পতাকা ওড়ায় এবং ক্যাম্পের অধিনায়ক নূরসহ পাকিস্তানি সৈন্যরা মুক্তিযােদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। আড়িয়াবাজার যুদ্ধে মুক্তিযােদ্ধা মাসুদ (পিতা ডা. টি আহম্মেদ, বগুড়া সদর) শহীদ হন। যুদ্ধের পর মুক্তিযােদ্ধারা বন্দি পাকিস্তানি সৈন্য ও উদ্ধারকৃত ট্রাক ভর্তি এমুনিশন বগুড়া শহরে নিয়ে এসে সৈন্যদের বগুড়া জেলখানায় আটক করে রাখেন। মুক্তিযােদ্ধা মাসুদ শহীদ হওয়ার সংবাদে শহরবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে জেলখানার তালা ভেঙ্গে বন্দি পাকসেনাদের হত্যা করে। [সাহিদুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!