আড়কান্দি ব্রিজ অপারেশন
আড়কান্দি ব্রিজ অপারেশন (বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী) পরিচালিত হয় ২০শে জুলাই। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার এ ব্রিজটি চন্দনা-বারাসিয়া নদীর ওপর অবস্থিত।
আড়কান্দি ব্রিজ হয়ে পাকবাহিনীর গাড়ি, ট্যাংক প্রভৃতি চলাচল করত। তাই মুক্তিযােদ্ধারা যাতে ব্রিজটি ধ্বংস করতে না পারে সেজন্য রাজাকাররা এখানে নিয়মিত পাহারা দিত। মে মাসের প্রথম থেকে এলাকার প্রায় প্রতিটি ব্রিজেই হানাদাররা পাহারার ব্যবস্থা করে। এলাকার মুক্তিযােদ্ধা শেখ নজরুল ইসলাম (পিতা আকবর হেসেন, ডুমাইন) ছিলেন ছাত্র ও যুবকদের নিয়ে গঠিত মুক্তিযােদ্ধাদের গ্রুপ কমান্ডার। ভারত থেকে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনিই প্রথম ডুমাইন-বালিয়াকান্দিতে ফিরে আসেন। হাবিলদার সৈয়দ আহম্মদ চৌধুরী (সােনাপুর), জয়নাল আবেদীন (বােয়ালমারী) এবং নজরুল ইসলাম মিলে স্থানীয় যুবকদের গেরিলা প্রশিক্ষণ দিয়ে ৩০ জনের মতাে মুক্তিযােদ্ধাদের একত্রিত করেন। তারা আড়কান্দি ব্রিজে অবস্থানরত রাজাকার বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশনের পরিকল্পনা করেন। ২০শে জুলাই মুক্তিযােদ্ধারা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে নৌকাযােগে আড়কান্দি ব্রিজের কাছে যান এবং খালের পূর্ব ও পশ্চিম পাড় থেকে একযােগে রাজাকারদের আক্রমণ করেন। পাহারারত রাজাকাররা হঠাৎ প্রচণ্ড গুলির শব্দ শুনে ব্রিজ থেকে পানিতে লাফিয়ে পড়ে এবং সাঁতার কেটে অন্যরা পালিয়ে যেতে পারলেও অহিদ নামে এক রাজাকার ধরা পড়ে। পরে গণপিটুনিতে সে নিহত হয়। রাজাকাদের ফেলে যাওয়া ৫টি রাইফেল মুক্তিযােদ্ধাদের হস্তগত হয়।
শেখ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অপারেশনে অংশ নেন শহীদুল, মফিজুর রহমান, হাফিজুর রহমান, আব্দুস সােবাহান মিয়া, জহুরুল হক, মাে. গােলাম রব্বানী, আব্দুল আজিজ, নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, আব্দুর রহমান টুকু, আব্দুস সালাম, আহম্মদ আলী, বদরউদ্দিন, আকবর আলী প্রমুখ মুক্তিযােদ্ধা। [এম ইকরামুল হক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড