You dont have javascript enabled! Please enable it!

আজ্ঞাপুর গণহত্যা

আজ্ঞাপুর গণহত্যা (বুড়িচং, কুমিল্লা) সংঘটিত হয় আগস্টের প্রথম সপ্তাহে। এতে নারী ও শিশুসহ ৫ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন।
বুড়িচং উপজেলার আজ্ঞাপুর গ্রামে রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনী হামলা করে এবং গণহত্যা চালায়। হানাদারদের ভয়ে গ্রামের জনৈক আবদুর রহমান তার স্ত্রীপুত্র পরিবার নিয়ে দূরে কোথাও পালাতে না পেরে রেললাইনের পূর্বদিকে আবদুল মতিনের বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে আশ্রয় নেয়। এক পর্যায়ে আবদুর রহমানের শিশুকন্যা আসিয়া খাতুন কেঁদে উঠলে পাকিস্তানি সৈন্যরা পরিবারটিকে দেখতে পায়। পাকিস্তানি বাহিনী ৭ সদস্যের পরিবারটির ওপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করে। আবদুর রহমানের কোলে শিশু জাহাঙ্গীর আলম এবং বড় পুত্র আবদুস সামাদের কোলে ছিল মােতালেব। হানাদাররা আবদুর রহমানের ওপর এমন নির্যাতন চালায় যে, তাতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। আবদুস সামাদের স্ত্রী শিশুপুত্রকে আগলে ধরলে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলি তার বুক ভেদ করে। আবদুর রহমান এ ঘটনায় চিৎকার করে উঠলে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাকে গুলি করে এবং সঙ্গে-সঙ্গে সে নিহত হয়। এ অবস্থায় আবদুস সামাদ ও তার মা আম্বিয়া খাতুন কী করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না। মা পাগলের মতাে দৌড় দিতেই হানাদারদের বুলেট তার পাঁজর ভেদ করে যায়। আবদুস সামাদ, তার দুটি শিশুপুত্র এবং বােন তখনাে বেঁচে ছিল। দুই ভাই-বােন দুটি শিশুকে কোলে তুলে নেয় আর অমনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হ্যাচকা টান মেরে শিশুদের আলাদা করে দুজনকে গুলি করে হত্যা করে। পুকুর পাড়ে পড়ে থাকে একই পরিবারের পাঁচজনের লাশ। পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশী আবুল কাশেম দুই নাবালক শিশুকে ভারতের কলমছড়ায় তাদের প্রতিবেশীদের কাছে পৌঁছে দেন। আবদুর রহমান, আম্বিয়া খাতুন, আবদুস সামাদ, মমতাজ বেগম ও আসিয়া খাতুনের লাশ ভারতের কলমছড়ায় এনে দাফন করা হয়। [তানভীর সালেহীন ইমন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!