You dont have javascript enabled! Please enable it!

আছর আলী মৃধার বাড়ি অপারেশন (হােসেনপুর, কিশােরগঞ্জ)

পরিচালিত হয় জুন মাসে। এতে একজন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন। অন্যদিকে ২ জন রাজাকারঘটনাস্থলে নিহত হয়, ১১ পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে এবং বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের হত্যা করে। আছর আলী নিজেও ধরা পড়ে এবং মুক্তিযােদ্ধারা তাকে হত্যা করেন।
কিশােরগঞ্জ জেলার হােসেনপুর উপজেলার আড়াই বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছর মৃধা ছিল পাকিস্তানপন্থী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে পাকবাহিনীর দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। রাজাকারদের সহযােগিতায় সে ও তার ভাই মিছির আলী মৃধা এলাকার স্বাধীনতাকামীদের বাড়িতে অগ্নিসংযােগ ও অত্যাচার-নিপীড়ন চালায়। তার অত্যাচারনিপীড়নের কথা জানতে পেরে মুক্তিযােদ্ধারা তার বাড়ি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। আছর আলীর বাড়িতে সর্বদা ১৫-২০ জন রাজাকার পাহারায় থাকত। জুন মাসের কোনাে এক রাতে কমান্ডার হারুন-অর-রশিদের (খাগডােহর, ময়মনসিংহ) নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা তার বাড়ি চতুর্দিক থেকে ঘেরাও করেন। কমান্ডার হারুন-অর-রশিদ আছর আলী মৃধাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালে প্রত্যুত্তরে বাড়ির ভেতরে অবস্থানরত রাজাকার এবং বাড়ির লােকজন মুক্তিযােদ্ধাদের ওপর প্রবল গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে চালাকচর গ্রামের একজন মুক্তিযােদ্ধা ঘটনাস্থলে শহীদ হন। মুক্তিযােদ্ধারা আছর আলীর বাড়ির ওপর পাল্টা আক্রমণ চালালে কয়েক মিনিটের মধ্যে আছর আলী মৃধার নাতি কাঞ্চনসহ ২ জন রাজাকার নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে টিকতে না পেরে রাজাকার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার সময় রাশিদ, আবু ও শিরুসহ ১১ জন রাজাকার মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। উত্তেজিত জনতা ঘটনাস্থলে তাদের কুপিয়ে হত্যা করে। এ অপারেশনে আছর আলী মৃধার এক ছেলে আহত হয় এবং মুক্তিযােদ্ধারা আছর আলী মৃধাকে আটক করতে সক্ষম হন। পরে তাকে চালাকচর গ্রামে (এ অপারেশনে শহীদ মুক্তিযােদ্ধার বাড়ি) নিয়ে হত্যা করা হয়। এ অপারেশনে যে-সকল মুক্তিযােদ্ধা অংশ নেন, তাঁরা হলেন- সামছুদ্দিন ওরফে শামু (দীপেস্বর), নুরুল হক (দীপেস্বর), আব্দুর রশিদ (দীপেস্বর), মাে. রইছ উদ্দিন (দীপেস্বর), খুর্শিদ উদ্দিন (দীপেস্বর), আতাউর রহমান আতু (জামাইল), আবুল হাশেম (ঢেকিয়া), এমদাদুল হক (ধনকুড়া) প্রমুখ। [শাহ মাে. আফতাব উদ্দীন]।

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!