আইরখামার বধ্যভূমি ও গণকবর (লালমনিরহাট সদর)
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত। বড়বাড়ি ইউনিয়নস্থ বড়বাড়ি হাটের বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়টি মুক্তিযুদ্ধকালে ছিল আইরখামার প্রথমিক বিদ্যালয়ের পাশের টিনশেড ঘরে। এ ঘরটিতে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমসহ আশপাশের আরাে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়।
বড়বাড়ি হাটের পাশেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। এ ক্যাম্পের সঙ্গে কয়েকশ রাজাকার ও বিহারি যুক্ত ছিল, যারা প্রতিনিয়ত বাঙালিদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাত। পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনী হাটের আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন সময়ে গণহত্যা চালায়। শতাধিক লােক এসব গণহত্যার শিকার হন, যাদের লাশ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে গর্ত করে মাটিচাপা দেয়া হয়। কোনাে গর্তে ২ জন, কোনাে গর্তে ৩-৪ জন করে লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়। নিহতদের অধিকাংশই ছিল বড়বাড়ি ইউনিয়নের বাইরের বাসিন্দা। গণকবরগুলাে সংরক্ষণ করা হয়নি, যে-কারণে এগুলাের কোনাে স্মৃতিচিহ্ন অবশিষ্ট নেই। মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী সময়ে এগুলাের ওপর দোকান, বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। একমাত্র আইরখামারে শহীদ মুক্তিযােদ্ধা মুখতার ইলাহী এবং অপর একজন মুক্তিযােদ্ধার কবর সংরক্ষিত রয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধকালে বিভিন্ন সময়ে বড়বাড়ি ইউনিয়নের যারা পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যার শিকার হন, সেসব শহীদের স্মরণে এখানে একটি স্মৃতিমিনার নির্মিত হয়েছে। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]।
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড