‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রাপ্ত অরুন্ধতী ঘােষ
অরুন্ধতী ঘােষ (১৯৩৯-২০১৬) ভারতীয় রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, লেখক ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ভারতের বিশিষ্ট নারী ব্যক্তিত্ব।
অরুন্ধতী ঘােষ ১৯৩৯ সালের ২৫শে নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বােম্বের ক্যাথেড্রাল এন্ড জন ক্যানন স্কুলে অধ্যয়ন করেন। তিনি কলকাতার লেডি ব্রাবাের্ন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যয়ন করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ভারতীয় পররাষ্ট্র সার্ভিসে (আইএফএস) যােগদান করেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি অস্ট্রিয়া, দ্য নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ, দক্ষিণ কোরিয়া ও মিশরে ভারতীয় মিশনে কর্মরত ছিলেন। তিনি জেনেভায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে প্রথম ভারতীয় স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। ১৯৯৬ সালে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসেবে তাঁকে জেনেভার সিটিবিটি (কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার-টেস্ট-ব্যান ট্রিটি) সম্মেলনে প্রেরণ করা হয়। ১৯৯৭ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৮-২০০১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক উপদেষ্টা বাের্ড, ১৯৯৮২০০৪ সাল পর্যন্ত ভারতের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি), ২০০৪-২০০৫ সাল পর্যন্ত ভারতের পক্ষে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সম্পর্কিত কমিটি, ২০০৪-২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের আইডিএসএ (ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ এন্ড এনালাইসিস)-এর কার্যনির্বাহী পরিষদ ইত্যাদির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৬ সালের ২৫শে জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ভারত সরকারের কলকাতাস্থ লিয়াজো অফিসের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার-এর সঙ্গে কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যােগাযােগ রক্ষা করতেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়ােজনীয় সাহায্য-সহযােগিতা প্রদান করেন। বাংলা ভাষায় জ্ঞান থাকায় তাকে এ কার্যসম্পাদনের জন্য মনােনীত করা হয়। শরণার্থী শিবিরগুলােতে নিয়মিত সহায়তা প্রদানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১২ সালের ২৭শে মার্চ অরুন্ধতী ঘােষ-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]।
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড