You dont have javascript enabled! Please enable it!

শহীদ মুক্তিযােদ্ধা অমিয় কুমার গুহ

অমিয় কুমার গুহ (পিতা অমৃত লাল গুহ, বানিয়াপাড়া) ছিলেন দিনাজপুর জেলার খানসামা থানা আওয়ামী লীগ-এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক। পাকসেনারা তাঁকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। অমিয় কুমার গুহ বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৬-দফা কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন এবং ৭১-এর (আসহযােগ আন্দোলন-এ স্থানীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। তাঁর নেতৃত্বে খানসামায় আন্দোলনের সকল কর্মসূচি পরিচালিত হতাে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী খানসামায় অনুপ্রবেশ করলে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল দলের নেতারা আত্মগােপন করেন। অমিয় গুহ আত্মগােপন করে গােয়ালডিহি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেরাজউদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা এবং রাজাকাররা সেখান থেকে তাঁকে ধরে পাকিস্তানি হানাদার সেনাদের হাতে তুলে দেয়। পাকসেনারা খানসামা থানায় তিনদিন আটক রেখে তার ওপর নির্মম শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের সময় তাঁর কাছ থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও মুক্তিযােদ্ধাদের সন্ধান চাওয়া হয়। তিনদিন পর তাকে থানা থেকে বের করে ইছামতি নদীর খাতামারি ব্রিজের নিচে নেয়া হয়। থানা থেকে নেয়ার সময় তার পরনে একটি গামছা ব্যতীত আর কিছু ছিল না। কোমড়ে দড়ি বেঁধে গাড়ির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে টেনে-হিচড়ে পাকসেনা ও রাজাকাররা তাকে নিয়ে যায়। খাতামারি ব্রিজের নিচে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর সারা শরীর রক্তাক্ত করা হয়। এরপর অর্ধমৃত অবস্থায় ব্রিজের নিচে ফেলে গুলি করে হত্যা করা হয়। শহীদ মুক্তিযােদ্ধা অমিয় কুমার গুহের নাম খানসামার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]।

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!