You dont have javascript enabled! Please enable it!

‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রাপ্ত অনিল কুমার সরকার

অনিল কুমার সরকার ভারতের অধ্যাপক ও সমাজসেবী। তিনি পূর্ববঙ্গে (বর্তমান বাংলাদেশ) জন্মগ্রহণ করেন। দেশবিভাগের পর ১৯৪৭ সালে তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গমন করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির সদস্য অনিল কুমার সরকার রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে শরণার্থী শিবিরস্থাপন, শরণার্থীদের জন্য খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্র, ওষুধপত্র ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণ করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এসব কাজে তিনি রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ান। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তিনি ভারতীয় বুদ্ধিজীবীদেরকে সংগঠিত করেন এবং ত্রিপুরার জনসাধারণকে বাংলাদেশের পক্ষে সংঘবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি তাঁর বাড়িতে বাংলাদেশ থেকে আগত বুদ্ধিজীবীদের থাকার ব্যবস্থা করেন। তাছাড়াও তিনি তাঁর বাড়িতে আহত মুক্তিযােদ্ধাদেরকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে আগত লক্ষ-লক্ষ অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষ যাতে সহজেই ভারতে প্রবেশ করতে পারে, এজন্য তিনি বিধানসভার তৎকালীন বিরােধী দলের নেতা নৃপেন চক্রবর্তীর সঙ্গে একত্রে কাজ করেন। ভারত সরকার কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্যও তিনি জোর দাবি জানান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে সপ্তম নৌবহর প্রেরণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীদেরকে নিয়ে তিনি সভা-সমাবেশের আয়ােজন করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর বিভিন্ন কবির লেখা কবিতা নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়ােজনে তিনি উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২৪শে মার্চ ২০১৩ অনিল কুমার সরকার-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]।

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!