মুজিবর নেতাজীর পথেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছেন
ভারতের স্বাধীনতার জন্য নেতাজী যে যুদ্ধ করেছিলেন, শেখ মুজিবর রহমান সেই পথেই বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন শুরু করেছেন। নেতাজীর ঐতিহাসিক অভিযান বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধাদের প্রেরণার উৎস। আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো আয়োজিত এক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন কালে রবিবার বাংলাদেশ মিশনের প্রধান শ্রী এম হোসেন আলি ওই কথা বলেন।
শ্রী আলি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিকামীদের উপর যে বর্বর অভিযান ও আক্রমণ চলেছে, বৃটিশ সরকারের অত্যাচার উৎপীড়নকেও তা হার মানিয়েছে। সারা ভারতের মুক্তির জন্য নেতাজী যে স্বাধীনতার মশাল জ্বেলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু তারই এক অংশ বহন করেছেন এবং ওই মুক্তিমশাল বাংলাদেশের মানুষ শেষদিন পর্যন্ত বহন করবে।
এ বছর আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা দিবসের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে বলে ডঃ শিশিরকুমার বসু মন্তব্য প্রকাশ করেন।
শরণার্থীদের দেশের ফেরার আমন্ত্রণ জানানো হবে
পাক-চক্রের শিকার হয়ে যারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর তাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হবে। বাংলাদেশের এম এন এ শ্রী এনায়েত হোসেন রবিবার কলকাতায় এক সভায় ওই কথা বলেন।
দক্ষিণ কলিকাতার ইটেলঘাট পুটিয়ারি ছাত্র পরিষদ ও যুবকংগ্রেসের ডাকে এদিন ওই সভা হয়। শ্রী চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সভাপতি ছিলেন। সভায় বাংলাদেশের উপর পাক-আক্রমণের নিন্দা করে বিভিন্ন বক্তা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অবশ্যম্ভাবী। পাকিস্তানী হুমকির উল্লেখ করে বিভিন্ন বক্তা বলেন, এই সঙ্কটময় মুহূর্তে মজুতদার ও মুনাফাখোরদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তথাকথিত আন্দোলনের নামে যদি কোনও অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা হয়, সঙ্গে সঙ্গে তা প্রতিরোধ করার জন্য তাঁরা সকলকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। সর্বশ্রী কানাই ভট্টাচার্য আবদুল মান্নান খাঁ, রথীন তালুকদার প্রমুখ সভায় ভাষণ দেন।
দৈনিক আনন্দবাজার, ২৬ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন