বাঙলাদেশের অন্তবর্তী সংবিধান রচনা সম্পূর্ণ
পাঁচতলা প্রশাসন ব্যবস্থা জনগণের পরামর্শদাতা কমিটির পরামর্শে কাজ করবে নতুন স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, প্রজাতান্ত্রিক বাঙলাদেশ এক অন্তবর্তী সংবিধান রচনার কাজ সমাপ্ত করেছে। আগরতলা থেকে ইউ-এন-আই প্রেরিত সংবাদে জানানো হয়েছে, ঐ সংবিধান রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী তাজুদ্দিন আমেদকে মুক্তিযুদ্ধকে অগ্রাধিকার দানের নির্দেশ দিয়েছে।
সংবাদ সূত্র জানিয়েছে আগামী দু একদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তবর্তী সংবিধানিক প্রচার ঘোষণা করা হবে।
নতুন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছেন, ছ-সাত পৃষ্ঠায় এই অন্তবর্তী সংবিধানে বাংলা দেশের জন্য পাঁচতলা শাসন ব্যবস্থার প্রচলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর এলাকা হবে পূর্বতন-পূর্ব-পাকিস্তানের অনুরূপ।
অন্তবর্তী সংবিধান সরকারকে বাঙলাদেশের সর্বত্র জরুরী অবস্থা ঘোষণার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে পর্যন্ত একটি গণ-পরিষদ চূড়ান্ত সংবিধান রচনা না করছে ততদিন নতুন সরকার যেসব নিয়মাবলী ঘোষণা করবে তাই আইনরূপ গণ্য হবে। অন্তবর্তী সংবিধানে সরকারের ওপর সেই ক্ষমতা ন্যস্ত করেছে।
এ ছাড়া নতুন সরকারের প্রতি অন্তবর্তী সংবিধানের নির্দেশ হলো জনগণের আশা আকাংখা পূরণের জন্য মুক্তাঞ্চলগুলিতে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা রচনা করা।
যে পাঁচতলা শাসন ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে তা কেন্দ্র, অঞ্চল, জেলা, মহকুমা এবং ব্লক পর্যায়ে জনগণের পরামর্শদাতা কমিটির দ্বারা পরিচালিত হবে। অফিসাররা এই কমিটির নির্দেশে ও নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিগুলি বিভিন্ন পর্যায়ে এই পরামর্শদাতা কমিটির দায়িত্ব পালন করবে বলে সংবিধান উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলা দেশকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হবে। অঞ্চল গুলি জেলায় বিভক্ত হবে। জেলাগুলির বর্তমান সীমানা পুনচিহ্নিত করে আরও নতুন জেলা গঠন করা হবে।
দৈনিক কালান্তর, ২১ এপ্রিল ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন