শিক্ষকবৃন্দের বাঙলাদেশ কূটনৈতিক মিশনের প্রধানকে অভিনন্দন
(স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ২১ এপ্রিল – পশ্চিম বঙ্গের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকবৃন্দ গতকাল ডেপুটেশন সহকারে সার্কাস এ্যাভিনিউয়ের বাঙলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক মিশনে গিয়ে কুটনৈতিক মিশনের প্রধান জনাব এম, হোসেন আলীকে অভিনন্দন জানিয়ে আসেন।
প্রথমে স্থির ছিল, শিক্ষকগণ দুটি পৃথক মিছিল নিয়ে কূটনৈতিক মিশনে যাবেন। কিন্তু অবিশ্রান্ত ধারায় বারিপাত হওয়ার ফলে শেষ পর্যন্ত মিছিলের কর্মসূচী বাতিল করে দেওয়া হয়। তার বদলে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির কো-অডিনেশন কমিটির দুটি পৃথক ডেপুটেশন জনাব হোসেন আলী ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রাথমিক শিক্ষকগণ জনাব হোসেন আলীকে অভিনন্দন জানিয়ে বাঙলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করেন এবং সংগ্রামের জন্য যথাসাধ্য সহায়তাদানের প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁরা যখন জনাব ও বেগম হোসেন আলীর সঙ্গে বাঙলাদেশের ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করছিলেন তখন বেগম আলী বা রুদ্ধ কণ্ঠে পাক হানাদারদের নৃশংস গণহত্যা ও দানবীয় অত্যাচারের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। প্রাথমিক শিক্ষকগণের এই ডেপুটেশনে ছিলেন সর্বশ্রী নির্মাল্য বাগচী, অনুপ পোদ্দার, সুধাংশু পালা চণ্ডী সামন্ত, কার্তিক সাহা প্রমুখ।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষে সর্বশ্রী শ্যামাপদ ঘোষাল ও বীণা চৌধুরীর নেতৃত্বে এক ডেপুটেশন জনাব আলীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে একটি অভিনন্দন-লিপি অর্পণ করেন। এই অভিনন্দন লিপিতে বাঙলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক সরকার ও মুক্তিকামী জনগণকে প্রীতি শুভেচ্ছা জানিয়ে ভারত সরকারের কাছে এই মর্মে আবেদন জানানো হয় যে স্বাধীন বাঙলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দিয়ে অস্ত্রশস্ত্রসহ সাহায্যদানের ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে।
দৈনিক কালান্তর, ২২ এপ্রিল ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন