You dont have javascript enabled! Please enable it!

কলকাতায় বাঙলাদেশের প্রথম কূটনৈতিক মিশন
পাক-ডেপুটি হাই কমিশনার দপ্তরের নতুন সাজ
(স্টাফ রিপোর্টার)

কলকাতার সার্কাস অ্যাভিনিউয়েতে পাকিস্তানী ডেপুটি হাই কমিশনের দপ্তর আর নেই, রবিবার দুপুর একটায় এর নাম বদলে হয়েছে ভারতস্থ বাঙলা দেশের কূটনৈতিক মিশন দপ্তর। পাকিস্তানের পতাকার জায়গায় উড়ছে স্বাধীন বাঙলা দেশের সবুজ, রক্তিম ও স্বর্ণাভ বর্ণ শোভিত পতাকা। ডেপুটি হাই কমিশনার এম হোসেন আলি নিজে এই পতাকা তুলেছেন। অন্যান্য অফিসারদের সঙ্গে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বাঙলাদেশ ও তার সরকারের প্রতি তিনি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন। অপেক্ষা করছেন ঐ সরকারের নতুন নির্দেশের।
স্বাধীন, সার্বভৌম এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক বাঙলাদেশ ও তার সরকার প্রতিষ্ঠার একদিনের মধ্যেই এই প্রথম পাকিস্তানের একটি বৈদেশিক দপ্তর ইয়াহিয়ার হাত ছাড়া হলো।
জনাব এম, হোসেন আলি তাঁর এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ঘোষণা করে বলেন তিনি বা তাঁর অফিসের অন্য কোন ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন নি এবং করার প্রশ্নই ওঠে না। জনাব আলি গত চার মাস কলকাতা ডেপুটি হাই কমিশনের পদে নিযুক্ত আছেন।

কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দের অভিনন্দন
এই খবর শোনার পর আজ রাজ্য পরিষদের সম্পাদক ডা. রনেন সেন এবং স্থানীয় কমিউনিস্ট নেতা ডা. এ, এম, ও গণি ‘বাঙলাদেশ’ এর কূটনীতিক মিশনে গিয়ে জনাব হোসেন আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
ডা. সেন জনাব আলীর সঙ্গে করমর্দন করে বলেন-“আপনার সাহসিকতা ও দেশপ্রেম আমাদের বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে।” প্রত্যুত্তরে জনাব আলী তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন-“এখন তো সব কিছুই আপনাদের উপর নির্ভর করছে।”
এই ঘটনা প্রচারিত হওয়া মাত্র স্থানীয় যুব কংগ্রেস কর্মীবৃন্দ মিছিল সহকারে ‘বাঙলাদেশ’-এর কূটনীতিক মিশনের সামনে গিয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন। প্রচুর বাজী ফাটিয়ে জনতার পক্ষ থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উচ্ছাস জানানো ও হয়েছিল। সমগ্র অঞ্চলে, বিশেষতঃ তরুণদের মধ্যে, দারুণ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।
বিভিন্ন অপরাপর রাজনৈতিক দলের নেতাও ঐ কূটনীতিক মিশনে গিয়ে জনাব আলীকে অভিনন্দন জানিয়ে আসেন।
কূটনৈতিক মিশনে গিয়ে জানা গেল প্রাক্তন পাক হাইকমিশনের কূটনীতিবিদসহ সাধারণ কর্মচারীদের সংখ্যা ছিল ৯০। এদের মধ্যে ৬০ জন ‘বাঙলাদেশ’ সরকারের প্রতি সার্বিক আনুগত্য ও আস্থা ঘোষণা করেছেন।
পাকিস্তান সরকারের সেবা করেছি। পাকিস্তান সরকার বুলেটিন প্রকাশ করে জানাত সব কিছু স্বাভাবিক আছে কিংবা নিয়ন্ত্রণে আছে। যেহেতু সমস্ত যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে গেছে সেজন্য বাঙলাদেশে কি ঘটছে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন প্রামাণ্য সংবাদ ছিল না। হাজার হাজার ভয়ার্ত, আহত এবং নিগৃহীত বাস্তহারা মুসলমান এবং হিন্দু, সীমান্ত পার হয়ে ভারতে এসেছে। তারা বয়ে এনেছে রক্তজল করা অমানুষিক বর্বরতার অসংখ্য কাহিনী। প্রসঙ্গক্রমে, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যে ভারতকে পাকিস্তানের জাতশত্রু বলে গণ্য করা হতো, সেই ভারতই এখন নিজের সরকার দ্বারা বলপূর্বক বিতাড়িত লক্ষ পাকিস্তানীর একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ভারতীয়রাই এঁদের আশ্রয়, খাদ্য এবং ওষুধপত্র দিয়ে সাহায্য করছেন। বাঙলাদেশের বাইরে এই কূটনৈতিক মিশনটিই সবচেয়ে কাছে এবং আমাদের অনেকেই এই বাস্তহারাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত করেছেন। বিদেশী এবং নিরপেক্ষ সাংবাদিক যারা বাঙলাদেশের অনেক ভেতরে গিয়ে ছিলেন এবং খুব কাছ থেকে ঘটনাবলী প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁরা নিরপেক্ষ সংবাদের উৎস।
যে ছবি এর ভেতর থেকে ফুটে বেরিয়েছে তা যেমন নির্মম তেমনি ভয়াবহ। ইতিমধ্যেই বাছাই করে ঠাণ্ডা মাথায় জাতিহত্যা ওখানে ঘটে গেছে এবং এখন তা বাঙলাদেশের সর্বত্র বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত সাক্ষ্য এবং প্রমাণ বলছে পাকিস্তানী ফৌজ বাঙলা দেশের সমগ্র নিরীহ এবং নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে যার অর্থ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। তারা আকাশ থেকে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করছে, মেশিনগান থেকে গুলি ছুড়েছে। তার গ্রামও শহরের ওপর গণহত্যার জন্য ট্যাঙ্ক, কামান, মর্টার এবং মেশিনগানের মত উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করছে। তারা আগুনে বোমা এমনকি শোনা যাচ্ছে নাপাম ব্যবহার করছে। যে সরকার নিজেকে সমগ্র পাকিস্তানের সরকার বলে দাবি করে সে গভীর রাতে বাঙালী বুদ্ধিজীবী এবং জননেতাদের বৃহৎ এক অংশকে পরিকল্পনা মাফিক খুন করেছে। তারা সুচিন্তিত ভাবে করেছে অসংখ্য অধ্যাপক, ছাত্র, বাঙালি পুলিস এবং আধাসামরিক পুলিসকে। সেই সঙ্গে তাদের বিশেষ লক্ষ্য ছিল বাঙলাদেশে অবস্থান রত সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বাঙালীদের। এখন শোনা যাচ্ছে তারা ধারাবাহিক ভাবে সমস্ত সক্ষম বাঙালীদের নিঃশেষ করার চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গণহত্যার উন্মাদনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাস্তায় রাস্তায় মৃতদেহের স্তূপ জমে আছে তাড়াহুড়ো করে মাটি চাপা দেওয়া গণ-কবরের মধ্যে থেকে মৃতদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি বাইরে থেকে নজরে পড়ছে। ঢাকা শহরের একাংশ এবং প্রায় সমস্ত শহর যেমন চট্টগ্রাম, যশোর, রাজশাহী, পাটনা, শ্রীহট্ট, প্রভৃতি শহরগুলি হয় সম্পূর্ণ না হয় আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। আর অবশিষ্ট শহরাঞ্চল এবং অনেক গ্রাম খাঁ খাঁ করছে। সেখান থেকে লোকেরা নিরাপত্তার জন্য হয় আরও ভেতরে চলে গেছে না হয় সীমান্তে দিকে পালিয়ে এসেছে। ধ্বংসের এই তাণ্ডবলীলা এখনও চলছে। পলায়নরত নারী, পুরুষ এবং শিশুদেরও মেশিন গানে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করা হচ্ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান, পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এমনকি ধানের গোলাগুলো পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে, ব্যাঙ্কগুলো লুঠ করা হয়েছে, সোনা টাকা-পয়সা এবং গয়নাগাটি সমেত সমস্ত মূল্যবান সামগ্রী মেয়েদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। শোনা যাচ্ছে এ সবই পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠানো হচ্ছে।
মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে বাঙালী জাতি যেন “ক্রীতদাস এবং বেশ্যার” জাতিরূপেই বেঁচে থাকে সেজন্য পাকিস্তান সরকার গোটা বাঙালী জাতিটাকে পদানত এবং ধ্বংস করার এক পরিকল্পিত প্রয়াসে মেতে উঠেছে। নেতা, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র এবং যুবক-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সমস্ত সক্ষম পুরুষকে হত্যা করার পরিকল্পনার আপাত উদ্দেশ্য হলো, আগামী কয়েক যুগ ধরে বাঙলাদেশ যেন কোন নেতৃত্ব দিতে না পারে তা নিশ্চিত করা।
এই সুচিন্তিত এবং ধারাবাহিকভাবে জাতি হত্যার নীতি অবলম্বন করে পাকিস্তান সরকার কার্যত বাঙলাদেশের পৃথক জাতি সত্ত্বার স্বীকৃতি দিয়েছে। বাঙলাদেশ যে একটা পৃথক দেশ, পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে এর যে ভাবাবেগ বা ভাব প্রবণতা জাত সামান্যতম কোন সম্পর্ক নেই তার প্রমাণ হলো পশ্চিম পাকিস্তানের কোন কোন উল্লেখযোগ্য মহল বাঙলাদেশের, এই গণহত্যার মৌখিক নিন্দাটুকু করে নি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং তার আওয়ামী লীগ দলের সমস্ত প্রদেশের স্বায়ত্তশাসনের কর্মসূচীতে বিপুল ভোটে সমর্থিত হয়েছে। এরা একটি ঐক্যবদ্ধ দেশের মধ্যে বাঙলাদেশ ও অন্যান্য প্রদেশের জন্য ন্যায় বিচার চেয়েছিলেন। শেখ মুজিবর রহমান বার বার ঘোষণা করেছেন যে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে চান না, কারণ সংখ্যালঘিষ্ঠ অংশ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠের বিচ্ছিন্ন হওয়াটা স্বাভাবিক নয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খান নিজেই স্বীকার করেছিলেন নির্বাচন ন্যায়সঙ্গতভাবে হয়েছে। তারও কিছুদিন পরে তিনি শেখ মুজিবর রহমানকে পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রীরূপে ঘোষণা করে ছিলেন। নির্বাচনী ফল প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ সমগ্র দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন লাভ করেছে। পূর্ব পাকিস্তানে, বর্তমানে বাঙলাদেশে প্রায় প্রতিটি ভোটার কার্যত এক গণভোটে আওয়ামী লীগকে এবং তার স্বায়ত্বশাসনের কর্মসূচীকে সমর্থন করেছে।
পশ্চিম পাকিস্তানের কায়েমী স্বার্থের আদেশে জেনারেল ইয়াহিয়ার একমাত্র যা ছিল স্বাভাবিক সেই পন্থা অনুসরণ করলেন। না সেই পদ্ধতি হল দেশের সংবিধান রচনা এবং একটি জনপ্রিয় সরকার গঠনের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে পার্লামেন্টের অধিবেশন বসানো। আমরা তবুও আশা করেছিলাম যে শুভবুদ্ধির জয় হবে এবং জেনারেল ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য নেতৃবর্গ জনগণের রায় গ্রহণ করে সর্বজনগ্রাহ্য এক সমাধনে পৌঁছবেন। কিন্তু উপরে যে ঘটনার উল্লেখ করা হলো তা প্রমাণ করে যে আমাদের সেই আশা মিথ্যা ছিল।
এখন শেখ মুজিবের রাষ্ট্রপতিত্বে বাঙলা দেশের সরকার গঠিত হয়েছে এই নতুন সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীরা সকলে বাঙলা দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাঁরা মুজিবর রহমানের বিশ্বস্ত সহকর্মী। সেজন্য আমরা এখন প্রকাশ্যেই বাংলাদেশের নিপীড়িত জনগণের ভাগ্যের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করার সিদ্ধান্ত করেছি। কারণ কোন বিবেচনাতেই আমরা পাকিস্তানের সেই সরকারের সেবা আর করতে পারি না যে সরকার আমাদের জনগণকে সম্পূর্ণত ধ্বংস করার জন্য উদ্যত এবং যার সৈন্যরা যুদ্ধকালীন অপরাধের সঙ্গে সঙ্গে গণহত্যা করছে নিঃসন্দেহে যাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলা যায়৷
এই কূটনৈতিক মিশনের প্রধানরূপে আজ ১৮ এপ্রিল আমি স্বাধীন, সার্বভৌম এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও তার নবগঠিত সরকারের প্রতি আমার পূর্ণ ও দ্বিধাহীন আনুগত্য ঘোষণা করছি। আমার তিনজন অফিসার আমার এই সিদ্ধান্তের আন্তরিক সমর্থন জানিয়েছেন। বাংলাদেশের সরকারের সেবার জন্য আমরা নিজেদের সমর্পণ করছি এবং এখন থেকে এই অফিস ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনরূপে কাজ করবে।
আমাদের এই অফিসের যে কর্মচারীরা পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যেতে চান তাঁরা কোনরূপ বাধা এবং প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করতে পারেন এ নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষমতার ভিত্তিতে আমরা জাতিসংঘ এবং বিশ্বের সমস্ত দেশের কাছে বাঙলাদেশ ও তার সরকারকে স্বীকৃতি দানের আবেদন জানাচ্ছি। কারণ, এই সরকারই সমগ্র জনতার আনুগত্য এবং সমর্থন লাভ করেছে। একটি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি- স্বীকৃত সীমানা, সাড়ে সাত কোটি নরনারী এবং দেশের অভ্যন্তরে ক্ষমতাসীন একটি জনপ্রিয় সরকার। বাঙলাদেশের তা আছে। আমরা এখনও জেনারেল ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের বিবেচক অংশের কাছে বাংলাদেশের প্রকৃত পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে এবং এর স্বাধীনতা স্বীকার করতে আবেদন করছি। এটা হবে রাষ্ট্রনায়কোচিত কাজ এবং দেরিতে হলেও একটি সৎ প্রয়াস এবং হয়ত এর ফলে বাংলা দেশের সমগ্র জনজীবনে যে বিরাট ক্ষত সৃষ্টি করা হয়েছে কালক্রমে তা জোড়া লাগতে পারে। ইতোমধ্যে, আমরা মুক্তিপ্রেমী সমস্ত দেশের এই জীবন মরণ সংগ্রামে বেঁচে থাকার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য সাহায্য পাঠানোর আবেদন করছি। বাংলাদেশের অর্থনীতি এই মনুষ্য সৃষ্ট দুর্বিপাকের আগে থেকেই এমন অবস্থায় ছিল যার ফলে পৃথিবীর মধ্যে এই দেশ দরিদ্রতম। গত ২৩ বছর ধরে পশ্চিম পাকিস্তানের পরিকল্পনামাফিক শোষণ এবং বঞ্চনার ফলে এর অর্থনীতি আজ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত এবং কোনরূপ আমদানি, উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থার অভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ চরম বিশৃক্মখল। বাংলাদেশের জনগণকে সাহায্য দানে কোনরূপ বিলম্বের অর্থ হবে হত্যা, ধ্বংস, রোগ, সংক্রামক ব্যাধি এবং এমনকি অনাহারের হাতে এর কার্যত অবলুপ্তি। আমাদের মানবতার এই আবেদন আশা করে মানব জাতির যে বিবেক এখনও বেঁচে আছে তাদের নাড়া দিতে সক্ষম হবে।”
জিন্না ও ইকবালের প্রতিকৃতির বদলে মুজিবর ও নজরুলের প্রতিকৃতি ভারতে ‘বাঙলাদেশ’এর প্রথম কূটনৈতিক মিশনে রূপান্তরিত হবার পর পাকিস্তানে ডেপুটি হাইকমিশনের সেন্ট্রাল হলে জিন্না ও সার মহম্মদ ইকবালের প্রতিকৃতি দুটি নামিয়ে ফেলা হয়। বাঙলাদেশ-এর রাষ্ট্র প্রধান শেখ মুজিবর রহমান ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতি দ্বারা হলটিকে এর পরেই সজ্জিত করা হয়েছে।
বিভিন্ন দূতাবাসের অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে পারে।
‘বাংলাদেশ সরকারের জনৈক মুখপাত্র এই আশা প্রকাশ করে যে কলকাতার পাকিস্তান ডেপুটি হাই কমিশনের কূটনীতিবিদেরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বহু পাকিস্তান দূতাবাসের কূটনীতিবিদ সেই পদক্ষেপ নেবেন।
দৈনিক কালান্তর, ১৯ এপ্রিল ১৯৭১

সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!