You dont have javascript enabled! Please enable it!
বঙ্গবন্ধুকে দেখতে কেনেডি ঢাকা এলেন
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ প্রকাশিত এপি ভিডিও

১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ কেনেডির ঢাকা আগমন।

বাংলাদেশের পরম বন্ধু মার্কিন সিনেটর টেড/এডওয়ার্ড কেনেডি তেজগাঁও বিমানবন্দরে পৌছলে তাকে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয়। তার সাথে আছেন তার স্ত্রী এবং ভাতিজা জোসেফ কেনেডি। জোসেফ কেনেডির মেঝ ভাই রবার্ট কেনেডির ছেলে। এদিন বসন্তের প্রথম দিন হলেও বৃষ্টির কারনে বসন্তের আমেজ ছিল না। তবে কনকনে শীত ছিল। দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়া সত্ত্বেও বিমান বন্দরে বিপুল সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী উপস্থিত ছিল। কেনেডিকে স্বাগত জানান বাণিজ্যমন্ত্রী এম আর সিদ্দিকি তার সাথে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রধান আব্দুর রাজ্জাক, বদরুন্নিসা আহমেদ এমসিএ ও ন্যাপের মহিউদ্দিন আহমেদ। তাকে দেখতে জনতার ধাক্কাধাক্কিতে সেখানে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামলাতে ভারতীয় বাহিনীও ব্যার্থ হয়। এ জন্য লাল গালিচা দিয়ে কেনেডির যাওয়া বাতিল হয় এবং পরিচয় পর্ব পণ্ড হয়। ভীড়ে তার কাছেও সাংবাদিকরা যেতে পারেনি। বহু কষ্টে তাকে গাড়ীতে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হয়। ১২ টার দিকে কেনেডি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেন। সেখানেও ছিল প্রচণ্ড ভিড় এখানে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরাও এসেছিল। সমাবেশের উল্লেখ যোগ্য দিক ছিল বাসন্তী শাড়ী পরে বিপুল সংখ্যক মহিলার উপস্থিতি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেনেডি বলেন আমি বাংলাদেশের জনগনের জন্য মার্কিন জনগনের শুভেচ্ছা নিয়ে এসেছি। সমাবেশে তিনি গত আগস্টে তার ভারত সফরের স্মৃতি রোমন্থন করেন। তিনি বলেন পাকিস্তান সরকার সে সময়ে আমাকে পূর্ব পাকিস্তান সফরের অনুমতি দেয়নি। সে সময় বাংলাদেশ সফর করতে না পারায় তিনি এখনও কষ্ট অনুভব করেন। কেনেডি বলেন আমি শেখ মুজিব থেকে শিক্ষা নিতে এসেছি যার অনুপ্রেরনায় বাংলার মানুষ দেশের স্বাধীনতার জন্য অস্র ধরেছিল। কেনেডি বক্তৃতা শেষ করে জয়বাংলা স্লোগান দেন। সভায় ছাত্রলীগের ৪ নেতা ছাড়াও ছাত্র ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বক্তব্য প্রদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান শেষে কেনেডি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের সাথে বৈঠক করেন। এর পর তিনি কুষ্টিয়া যান।

১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ মুজিব কেনেডি বৈঠক

সিনেটর কেনেডি সোমবার সন্ধায় শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তার বাসায় সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা ৮০ মিনিট যাবত বৈঠক করেন। শেখ মুজিবের সাথে বৈঠক শেষে কেনেডি জানান বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি আরও আগে দেয়া উচিত ছিল। আমরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার একটি প্রস্তাব পেশ করে রেখেছি আশা করি দ্রুতই স্বীকৃতি দেয়া হবে। তিনি বলেন তিনি প্রধানমন্ত্রী র সাথে বাংলাদেশের সমস্যা নিয়েই আলোচনা করেছেন। তিনি জানান তিনি নিজে ছাড়াও তার ভাতিজা ও স্ত্রী শেখ মুজিবের ভক্ত।
বৈঠক শেষে শেখ মুজিব সাংবাদিকদের বলেন বাংলাদেশ আজ বাস্তব সত্য কেউ স্বীকৃতি দিক আর না দিক বাংলাদেশ তার অস্তিত্ব বজায় রাখবে। কেনেডি প্রসঙ্গে তিনি বলেন তিনি একজন সন্মানিত বেক্তি। তিনি ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি সারা বিশ্ব এ পাকিস্তানীদের বর্বরতার বিরুদ্ধে বলে গিয়েছেন তাকে বাংলাদেশে সন্মানিত করতে পেরে তিনি আনন্দিত। মুক্তি সংগ্রামে তার অবদানের জন্য বাংলাদেশের জনগন তাকে চিরদিন মনে রাখবে।

Click the link below
error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!