বাঙ্গালী রাজাকাররা সাবধান
নরপিশাচ ইয়াহিয়া খান তার বর্বর সামরিক বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য বাঙ্গালী যুবকদের জোর করিয়া রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করিতে বাধ্য করিয়াছেন। সমাজ বিরোধী এক শ্রেণীর গুন্ডা-বদমাশে লম্পটরাও এই সুযোগে রাজাকার বাহিনীতে ঢুকিয়া পড়িয়াছিল। ইহারা জনসাধারণের জান-মালের যথেষ্ট ক্ষতি সাধন ও ধন-সম্পত্তি লুন্ঠন করিয়া অরাজকতা সৃষ্টি করিয়াছিল। কিন্তু ইদানিং মুক্তিয়ৌজের ক্রমাগত সাফল্যের ফলে এক শ্রেণীর রাজাকার যারা নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করিতে বাধ্য হইয়াছিল তাহারা মুক্তিফৌজ গেরিলাদের হাতে প্রত্যহ আত্মসমর্পণ করিয়া চলিয়াছে। রাজকারদের মনে আরও ভীতির সঞ্চার করিয়াছে যখন তাহারা দেখিতে পায় পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনী মুক্তিফৌজের ভয়ে তাহাদিগকেই প্রথমে সম্মুখে ঠেলিয়া দেয়। রাজাকাররা ইদানিং তাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে অত্যন্ত চিন্তিত হইয়া পড়িতেছে। তাদের মানসিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য রাখিয়া এই কথাই বলিব অবিলম্বে যেন তারা তাদের অস্ত্রশস্ত্রসহ মুক্তিফৌজের হাতে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের অপকীর্তি দেশদ্রোহিতার সামিল এবং দেশদ্রোহিতার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড। এই মৃত্যুদন্ড এড়াইবার একমাত্র পথ হইল নিকটস্থ মুক্তিফৌজ শিবিরে অবিলম্বে আত্মসমর্পণ।
বাংলাদেশ ১ : ২১ ॥ ১৫ নভেম্বর, ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন