You dont have javascript enabled! Please enable it!

দালাল খতম চলছে চলবে—

ঢাকা, ২৩শে নবেম্বর : সম্প্রতি একজন বিদেশী সাংবাদিক মিঃ ক্লেয়ার হলিংওয়ার্থ পাকিস্তান সামরিক সরকারের গোপন সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছেন শহরগুলোতে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন দৈনিক কমপক্ষে ২০ জন হানাদার সৈন্য প্রাণ হারাচ্ছে।
মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযোদ্ধারা হানাদার সৈন্য ও তাদের তাবেদার দালালদেরকে যুগ্যপত খতম করে চলেছেন।
এবিসি-র (অস্ট্রেলিয়া ব্রডকাষ্টিং কর্পোরেশন) এক খবরে মুক্তি বাহিনীর অসম সাহসী বীর যোদ্ধারা গত ১৮ই নবেম্বর দখলীকৃত চাটগাঁ বেতারের জনৈক সহকারী আঞ্চলিক পরিচালককে প্রকাশ্যে গুলী করে খতম করেন। এর আগে ঢাকা বেতারের জনৈক সিনিয়র রেডিও ইঞ্জিনিয়ারকে প্রকাশ্য দিবালোকে পাকিস্তানী সৈন্যদের কড়া টহলদানের মধ্যে গ্রীন রোডের পথের ওপর হত্যা করা হয়। এই আক্রমণ কালে ঐ ইঞ্জিনিয়ারের পার্শ্ববর্তী অন্য দুইজনকেও গুরুতররূপে আহত করেন।
গত ১১ই নভেম্বর আমাদের বীর সেনানীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দখলীকৃত ঢাকা শহরের চারদিকে ব্যাপকভাবে আক্রমণ চালিয়ে কমপক্ষে ৮ জন বেঈমান কুখ্যাত দালালকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধারা আরেকটি সফল আক্রমণ চালান বায়তুল মোকারমে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের সংবাদ পরিবেশন করে ঢাকা বেতার কেন্দ্র জানাচ্ছে যে, গেরিলাযোদ্ধারা অত্যন্ত সন্তর্পণে বায়তুল মোকাররমের সম্মুখে কতিপয় দালালের পার্ক করা মোটরগাড়ীর সাথে বোমা লাগিয়ে রাখেন এবং সময় মত বোমা বিস্ফোরিত হলে উক্ত এলাকায় এক ভয়াবহ দৃশ্যের অবতারণা হয়। এই আক্রমণে ৫ জন নিহত এবং ৩৬ জন গুরুতররূপে আহত হয়। এছাড়া খানসেনা তাবেদারদের কয়েকটি গাড়ী বিনষ্ট হয়।
ঐদিন অপর এক স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা দুর্বার আক্রমণ চালিয়ে একজন দক্ষিণপন্থী রাজনীতিবিদসহ অপর ৩ জনকে গুলী করে হত্যা করেন।
একই দিনে গেরিলা যোদ্ধারা একটি কলেজ ও একটি সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে বোমা দ্বারা আক্রমণ চালিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেন। এখানে উল্লেখযোগ্য পাকিস্তানী জানোয়ার সৈন্যরা এখানে অবস্থান করছিল।
জয়বাংলা ॥ ১: ২৯ ॥ ২৬ নভেম্বর, ১৯৭১

সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!