You dont have javascript enabled! Please enable it!

এই কসাইদের হত্যা করতে হবে

যশোরের শত্রু কবলিত এলাকা থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, গত ৮ই নভেম্বর ভোরে যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানার অন্তর্গত চৈত্র বাড়ী বাজারে বহু শরণার্থী রাজাকারদের হাতে হতাহত হয়।
খবরে প্রকাশ, বরিশাল ও ফরিদপুর থেকে প্রায় ৪ হাজার হিন্দু-মুসলমান পশ্চিম বাংলায় আশ্রয় গ্রহণের উদ্দেশ্যে বনগাঁও সীমান্তের দিকে আসছিল। পথিমধ্যে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়া তারা চৈত্র বাড়ী বাজরের স্কুল ময়দানে আশ্রয় নেয়।
৮ই নবেম্বর ভোরের দিকে খাজুরা রাজাকার ক্যাম্প থেকে মুসলিম লীগ গুন্ডা ডক্টর ইব্রাহিমের নির্দেশে একদল রাজাকার এসে শরণার্থীদের ঘিরে ফেলে। তাদের সাথে যোগ দেয় কটুয়া কান্দির হাবিব, উত্তর চাঁদপুরের দলিল উদ্দীন মোল্লা, সমিন ও দাউদ, হুলিহট্টের এন্তাজ শেখ তাহের মীর ওরফে মটুক, পদ্মবিলার নুরুল মীর এবং নরসিংহপুরের জয়নাল, সদর ও বন্দর প্রমুখ গুন্ডা।
রাজাকার নামধারী এই গুন্ডারদল চারিদিক ঘিরে শরণার্থীদের জনে জনে তল্লাসী করে, তাদের সমস্ত টাকা পয়সা ও অলঙ্কারাদি ছিনিয়ে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনামতে তারা শারণার্থীদের কাছ থেকে নগদে ও অলঙ্কারাদিতে দু’লাখ টাকার মত ছিনিয়ে নেয়।
অতঃপর গুন্ডারা শরণার্থীদের নিজ নিজ বাড়ীতে ফিরে যেতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা এই বলে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায় যে স্থানীয় মিলিটারী ও রাজাকাররা তাদের সমস্ত বাড়ীঘর ভস্মীভূত করে ফেলেছে এবং তাদের সমস্ত জিনিষপত্র ও গরুবাছুর পর্যন্ত লুট করে নিয়েছে। সুতরাং তারা বাড়ী ফিরে যাবে না। এরপর গুন্ডারা তাদের উপর নির্বিচার গুলী চালায়। যার ফলে প্রত্যক্ষদর্শীর মতে শতাধিক নিরীহ শরণার্থী প্রাণ হারায়। শেষ পর্যন্ত শরণার্থীরা নিজ নিজ বাড়ী ফিরে যেতে বাধ্য হয়। খবরে আরো প্রকাশ, রাজাকাররা কয়েকটি তরুণ সুদর্শনা শরণার্থী মেয়েকে খাজুরা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং বর্তমানে তারা সেখানে পূর্বোল্লিখিত গুন্ডা সর্দার ইব্রাহিমের গৃহে আটক রয়েছে।
জয়বাংলা (১) ॥ ১ : ২৯ ॥ ২৬ নভেম্বর, ১৯৭১

সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!