গোলামের গোলাম
জল্লাদ ইয়াহিয়ার তল্পীবাহক গভর্ণর ডাঃ আবদুল মোত্তালিব মল্লিক ওরফে (মালিক) তার নিজের তল্লীবহনের জন্য ৯টি রত্নকে খুঁজে বের করেছে। প্রাথমিক তালিকায় এদের সংখ্যা দশ বলে জানা হলেও শেষ পর্যন্ত একজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় প্রতিনিধিত্বশীল বে-সামরিক সরকার চালুর নামে এই রত্নদের খুঁজে বের করা হলেও আসলে এদের একজনেরও প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্র নেই এবং কোনদিন ছিলও না।
নিম্নে তাদের প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্রের পরিচয় দেওয়া গেল :
১। আবুল কাসেম ওরফে মাইনকারচরের আবুল কাসেম। পাকিস্তানে বিশ বছরের জন্য সমস্ত বিরোধীদদল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করে। ১৯৫৪ সাল থেকে জনগণের ভোটে কোনদিন নির্বাচিত হতে পারেনি। গত ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিন কেন্দ্র হতে প্রার্থী হয় এবং প্রত্যেকটিতে পরাজিত ও জামানত বাজেয়াফত। দু’পার্টির ৩২টি দাঁতই নকল। চরম হিন্দু বিদ্বেষী।
২। এ, এস, এম, সোলায়মান … ৬০ টাকা বেতনের টেলিফোন অপারেটার। এক দস্যু বিশিষ্ট কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি। শ্রমিকহীন শ্রমিক সংস্থার নেতা। দালালীর এনাম হিসাবে আইয়ুব খানের ভ্রাতা বাহাদুর খানের খাইবার ইন্সুরেন্স কোম্পানীর আঞ্চলিক জেনারেল ম্যানেজার, পাকিস্তানের কুখ্যাত ২২ পরিবারের অন্যতম দাউদের বেতন-ভোগী গোলাম ও তাদের কর্ণফুলী পেপার মিলের রেসিডেন্ট ডিরেক্টর। গত নির্বাচনে জামানত বাজেয়াফত।
৩। ‘মওলানা’ এ, কে, এম, ইউসুফ—জামাতপন্থী কাঠ মোল্লা। গত নির্বাচনে জামানত বাজেয়াফত।
৪। আব্বাস আলি খান—জামাত নেতা মওদুদীর বেতনভোগী দালাল—লেখাপড়া বলতে যা বুঝায় তার কিছুই নেই। চার আনার মোল্লা। গত নির্বাচনে জামানত বাজেয়াফত।
৫। আখতারুদ্দীন আহমদ—সার্টিফিকেট অনুসারে ব্যারিষ্টার। তবে আইন পেশায় কোনদিন পয়সা উপার্জন করতে পেরেছে কিনা তা গবেষণার বিষয়। তাই হাই কোর্টে ওকালতির বদলে তিনি বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ—মানে দালালীর পেশা। একজন ডিগবাজী বিশারদ—— গত কয়েক বছরে তিনি কয়েকবার দল বদল করেছেন। গত নির্বাচনে জামানত বাজেয়াফত।
৬। নওয়াজেশ আহমদ কুষ্টিয়ার এক মুসলিম লীগ পন্থী রাখাল বালক।
৭। মওলানা ইসহাক—নিজের ও বাপ-দাদার পরিচয় জানার জন্য গবেষক দল নিযুক্তির দরকার।
৮। ওবায়দুল্লাহ মুজমদার—বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক, দালাল।
৯। শামসুল হক ….ঐ।
১০। মং সু প্রো—সেই পুরানো মাল (মোনেম খানের মন্ত্রী) গত নির্বাচনে ধরাশায়ী, জামানত বাজেয়াফত।
জয়বাংলা ॥ ১ : ২০ ॥ ২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন