অপুষ্টিতে শরণার্থী শিবিরে ৩ লক্ষ শিশুর মৃত্যুর আশংকা
(বিশেষ প্রতিনিধি)
বাংলাদেশ হইতে ভারতে আগত শরণার্থীদের মধ্যে অন্ততঃ তিন লক্ষ শিশু অপুষ্টিতে ভুগিতেছে এবং অনাহারও অর্দ্ধাহারের ফলে মৃত্যুর দিন গুনিতেছে কিংবা চিরতের পঙ্গু হইয়া যাইবার পথে আসিয়া পৌঁছিয়াছে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট সাবকমিটির একজন সদস্য রয়টারের নিকট এই কথা প্রকাশ করেন।
আর একজন পুষ্টিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ এই সাবকমিটিতে জানাইয়াছেন যে অন্ততঃ দশ লক্ষ শিশু অপুষ্টিতে ভুগিতেছে।
ম্যাসাচুসেটস ইনসটিটিউট অব টেকনোলজীর অধ্যাপক ডঃ স্ক্রিম’শ জানান যে অন্ততঃ পক্ষে তিন লক্ষ শরণার্থী শিশুর জন্য অবিলম্বে পুষ্টিজনিত খাদ্যদানের ব্যবস্থা না করা হইলে তাহাদের মৃত্যু বা পঙ্গুত্বের হাত হইতে বাঁচানো যাইবে না। তিনি আরও জানান আগামী কিছুদিনের ভিতরই আরো দশ লক্ষ শিশু উপযুক্ত খাদ্যের অভাবে এই রোগে আক্রান্ত হইবে।
ডাঃ স্ক্রিম’শ কিছুদিন আগে সিনেটর কেনেডীর সহিত ভারতে শরণার্থী শিবিরে পরিদর্শনের জন্য আসিয়াছিলেন। ডাঃ স্ক্রিমশ ম্যাসাচুসেটস ইনসটিটিউট এর খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান বৃটিশ সাহায্য প্রতিষ্ঠান ‘অকসফাম’ এর ভারত প্রতিনিধি মিঃ এলান লিথার সাবকমিটিতে জানান যে যদি অবিলম্বে এই ব্যাপারটি একান্ত গুরুত্ব সহাকারে মোকাবিলা না করা হয় তাহা হইলে হাজার হাজার শিশুর জীবনে মৃত্যুর বিভীষিকা নামিয়া আসিবে।
এই প্রসঙ্গে তিনি অল ইন্ডিয়া ইনসটিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এর পরিসংখ্যান উল্লেখ করিয়া বলেন যে অন্ততঃ পক্ষে শতকরা ৫০ জন শিশু প্রোটিন- ক্যালোরী অপুষ্টিতে ভুগিতেছে।
ডাঃ স্ক্রিমশ ও মি. লিথার শরণার্থীদের সাহায্যের ব্যাপারে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এই প্রসঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের নীরব ভূমিকা ও দায়িত্ব হীনতার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বাংলার বাণী ॥ ৬ সংখ্যা ॥ ৫ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন