আমি বাংলাদেশের মেয়ে আমাকে বাঁচান!
(ষ্টাফ রিপোর্টার)
“আমি বাংলাদেশের মেয়ে। দস্যুরা আমায় জোর করে এখানে নিয়ে এসেছে। কোন হৃদয়বান বাঙালী থাকলে আমাকে বাঁচান!” ছোট্ট এক টুকরা চিরকুটের মাধ্যমে করাচীতে বন্দিনী অসহায় সাঈদা আখতার এই আকুল আবেদন জানিয়েছেন করাচী প্রবাসী যে কোন বাঙালী ভাইকে।
রজব আলী নামক কোন এক ভিক্ষুকের সহযোগিতায় সাঈদার এই চিঠিখানি দু’দিন বাদে করাচীর মুসা কলোনীর বাঙালীদের হাতে এসে পৌঁছে। বাঙালী বোনকে নরপিশাচদের কবল থেকে উদ্ধার করার জন্য কলোনীর আওয়ামী লীগ কর্মী ফেরদৌস এবং ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রহমান ছুটে গেলেন উত্তর নাজমাবাদের একটি বাড়ীতে যে বাড়ীর ঠিকানা দেওয়া ছিল চিঠি খানায়। কিন্তু না, সাঈদাকে পাওয়া গেল না সেখানে। সে তবে কোথায়? কে জানে, হয়তো বা বাংলা দেশের হাজারো মা-বোনের যে দশা হয়েছে, তারও তাই, নয়তো আর কিছু।
সাঈদা আখতার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রথমবর্ষ ইংরেজী অনার্সের ছাত্রী। মার্চ মাসে খানসেনারা তাকে অপহরণ করে এবং জনৈক লেঃ কর্ণেল এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাকে করাচী নিয়ে যায়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে এ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ইয়াহিয়ার দস্যু বাহিনী এ ধরণের অসংখ্য পাপাচারে লিপ্ত।
সাপ্তাহিক বাংলা ॥ ১ : ১ ॥ ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন